নীলফামারীর ডোমারে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক হয়েছে মমিনুর ইসলাম নামে এক কৃষকদল নেতা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এ ঘটনায় কৃষকদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে, বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাতে উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামে ঘটনা ঘটে।
আটককৃত মমিনুর গোমনাতী ইউনিয়নের মৌজা গোমনাতী এলাকার এসলাম উদ্দীনের ছেলে। তিনি কৃষক দলের গোমনাতী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মমিনুর পেশায় একজন বন্ধু চুলার ব্যবসায়ী। চুলা বিক্রি করতে বিভিন্ন এলাকায় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে থাকেন তিনি। সেই সুবাধে বুধবার সন্ধ্যায় ওই নারীর শ্বশুরবাড়ি গোমনাতীর খালপাড়ায় আসেন। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পেইন করতে এলাকার পরুষ-নারীদের নিয়ে প্রোজেক্টর সেটিং করার জন্য মমিনুরসহ আরো দুজন ওই প্রবাসীর বাড়িতে চেয়ার নেয়ার জন্য আসেন। প্রজেক্টর সেটিং করা শেষ হলে মমিনুর উপস্থিত সকলের আড়াল হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেন স্থানীয়রা। এরপর প্রবাসীর স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় কৃষকদল নেতা মমিনুরকে আটক করে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, মমিনুর দীর্ঘদিন ধরে এমন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এর আগেও কয়েকজনের সঙ্গে এই ধরনের অপকর্ম করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়েছিল। তার এসব কাণ্ডে এলাকায় এর আগে বিচার-সালিশ হয়েছিল।
প্রবাসীর মা জানান, মমিনুর প্রায় আমাদের বাসা আসে এবং আমার বউমার সঙ্গে কথা বার্তা বলে। এটা নিয়ে আমি আমার বউমাকে বাইরের লোকের সঙ্গে বেশি কথা বলতে নিষেধ করতাম। আমি বাড়ি অন্যকাজে থাকার কারণে মমিনুর আমার বউমার ঘরে ঢুকে পড়ে। বউমার এমন কাণ্ড সম্পর্কে আমার প্রবাসী ছেলেকে জানালে আমার বউমা আমার ছেলের কাছে উলটো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এমন ঘটনা এলাকার অনেকেই জেনে গেছে, আমার পরিবার এলাকার লোকের কাছে ছোট হয়ে গেলো।
তবে কৃষক দল নেতা মমিনুর বলেন, ওই নারীর সঙ্গে আমি জোর করে কোনো কিছু করিনি।
তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে তাদের একটা পারিবারিক সমস্যার সমাধান করতে আমরা কয়েকজন এসে মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। পরে একদিন তাদের বাড়িতে আমাদের দাওয়াত করেছিলেন। এরপর ঘটনার দিনে সন্ধ্যায় বন্ধু চুলার প্রোগ্রাম বায়স্কোপে দেখাতে আমি ওই মহিলার ঘরে টুল নিতে ঢুকছিলাম। ঘর থেকে বের হবার সময়ে কয়েকজন মহিলা আমাকে দেখে চিৎকার করে।
প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, আমার ভাসুরের সঙ্গে ওই নেতা ভালো সম্পর্ক। এক মাস থেকে মমিনুরের সঙ্গে আমার মোবাইলে যোগাযোগ হয়। তিনি ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি পরিবারের সবার খোঁজখবর নিতেন, কোনোদিন আমাকে খারাপ কথা বলেনি। মাঝে মধ্যেই মমিনুর দেখা করার জন্য বাসায় আসতো বলে জানান প্রবাসীর স্ত্রী। ঘটনার দিনে আমি তাকে ঘরে ডাকিনি, তিনি নিজেই ঘরে ঢুকে জোর করে আমার শরীরে হাত দিয়েছেন।
ডোমার উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আফজাল হোসেন চৌধুরী হিরু জানান, বিষয়টি শুনেছি। তিনি আমাদের কৃষক দলে আছে। তদন্তে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডোমার থানার ওসি আরিফুল ইসলাম জানান, ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply