সমুদ্রে জেগে উঠছে দানব ঘূর্ণিঝড় ডানা, তছনছ হতে পারে যে অঞ্চল!

সমুদ্রে জেগে উঠছে এক ভয়ানক দানব! আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পরবর্তীতে এটি ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’-তে পরিণত হতে পারে। এটি আর কয়েকদিনের মধ্যেই আছড়ে পড়তে চলেছে উপকূলে।

এটি সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমার।

“ঘূর্ণিঝড় ডানা’র জেরে সমুদ্রে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ঘূর্ণঝড়টির প্রভাব খুলনা ও উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি থাকতে পারে।”

ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের গতি অনেক থাকবে। এটি শক্তি সঞ্চয় করবে। ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানার সময় তীব্র বিধ্বংসী হতে পারে। খবর- নিউজ১৮।

এদিকে কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে। সেই নিম্নচাপ ধীরে ধীরে আরো শক্তি বাড়াবে। নিম্নচাপের জেরে কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এই ঘূর্ণিঝড় কোথা দিয়ে স্থলভাগে ঢুকবে বা কোন জায়গায় আছড়ে পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যার উপকূলে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে।

ঘূর্ণিঝড় ডানা’র জেরে সমুদ্রে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রোববার নিয়মিত পূর্বাভাসে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের আগ পর্যন্ত দুইদিন বৃষ্টি কম হতে পারে। এরপর বুধবার থেকে বাড়তে পারে বৃষ্টি। আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। একই সঙ্গে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, লঘুচাপের ফলে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করছি। তবে এর গতিপথ কী হবে, কতটা শক্তিশালী হবে তা দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এখনই বলতে পারছি না। লঘুচাপ সৃষ্টির পর বলা যাবে। তবে ঘূর্ণিঝড় এই সপ্তাহের মধ্যে সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এর আগে চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। যার মধ্যে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। এছাড়া সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডিতে লিখেছেন, ১৮ অক্টোবর আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, লঘুচাপ থেকে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ অক্টোবর দুপুরের পর থেকে ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

সম্ভাবনা রয়েছে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার। সম্ভাবনা খুবই বেশি অক্টোবর মাসের ২২ তারিখ থেকে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার।

এদিকে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, লঘুচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে কোথায় আঘাত হানবে এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত এর যে গতিপ্রকৃতি, তাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বা ওডিশার দিকেই এটি আঘাত হানতে পারে। তবে নিশ্চিত করে এখনই বলা যায় না। বাংলাদেশের উপকূলে আসার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *