তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের যে বেকারত্ব, তা দূর করতে চাই। এটি নিশ্চিভাবেই বলতে পারি— আমরা যতদিনই ক্ষমতায় থাকি না কেন বা এই সরকার থাকে না কেন, সরকারি চাকরিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিয়োগ হবে। এর পাশাপাশি আমরা বেসরকারি ইনভেস্টমেন্ট আনার চেষ্টা করতেছি। যাতে বেসরকারি উদ্যোগেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যায়।
বুধবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শিক্ষার সংস্কার প্রয়োজন। সেইসঙ্গে শিক্ষার কী ধরনের সংস্কার লাগবে সেটি নিয়েও আমরা আলোচনা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান, এই সরকার কিংবা বর্তমান যে পরিস্থিতিতে আমরা আছি, ভালোমন্দ মিলিয়ে এর কৃতজ্ঞতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর শিক্ষার্থীদের কাছে। শিক্ষার্থীদের যে রাজনৈতিক অধিকার কিংবা রাজনৈতিক হিস্যা তা আমরা ফিরিয়ে দিতে বধ্যপরিকর। তার অন্যতম অধিকার ছাত্র সংসদ নির্বাচন। সরকারের জায়গা থেকে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। বাকিটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আশা করছি।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ যে মতাদর্শ দিয়ে, যে প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করেছে তাতে তারা আর কখনোই আসবে না। যদি আসে সেটা এই অভ্যুত্থানের শহিদদের কাছে প্রতারণার শামিল হবে। অবশ্যই আমরা আমাদের জীবন থাকতে এটা হতে দেব না।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নতুন বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কি না এই বিষয়ে কোনো দ্বিধা রাখার সুযোগ নাই। আওয়ামী লীগকে আমরা একটা ফ্যাসিস্ট দল বলি। আমরা ফ্যাসিস্ট বলতে বলতে মুখের ফেনা তুলে ফেলছি। তাহলে একটা ফ্যাসিস্ট দল গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কীভাবে রাজনীতি করতে পারে? ফ্যাসিস্ট বললে তার রাজনীতি করার অধিকার থাকে না।
সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে বলেন, শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগ করেন নাই। এটা সবার কাছে স্পষ্ট। তার পতন হয়েছে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত করেছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। আপনি বলতে পারেন তাহলে কেন সংবিধানের অধীনে সরকার গঠিত হলো? সেই সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা। রাষ্ট্রপতি এবং সংবিধান অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অকার্যকর হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষা করার জন্য আমরা তার (রাষ্ট্রপতির) অধীনে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয় সেটাকেও আমরা নতুন করে ভাবছি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক নয় উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে তুলনা করার চেষ্টা করে। আমি মনে করি এই তুলনাটা একেবারে ভুল। একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য দায়িত্ব নেয় এবং নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করে।
রাষ্ট্রীয় সংস্কারের বিষয়ে বলেন, সরকার অভ্যুত্থানের যে প্রত্যাশা বা কিছু মৌলিক সংস্কার যদি করে যেতে না পারে তাহলে গণতন্ত্রে রূপান্তরের পথটি মসৃণ হবে না। আমাদের অবশ্যই কিছু মৌলিক সংস্কার করে যেতে হবে। এই সংস্কারের ভিতরে আছে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মানে রাষ্ট্রে কারা রাজনীতি করতে পারবে, কারা পারবে না, রাষ্ট্রের আদর্শ, জাতীয় সংস্কৃতি এই জিনিসগুলো নির্ধারণ করা। আমরা চাই ব্যবস্থার পরিবর্তন। যাতে ঐ ব্যবস্থার মধ্যে যেই আসুক না কেন সে যেন আরেকজন শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে। এটা এই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদুর রহমান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
Leave a Reply