পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবার দুর্গাপূজায় দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য কোনো কোনো দেশ নয়। কেবল বাংলাদেশ সরকারই সংখ্যালঘুদের দাবি পূরণ করতে পারে। তাই সংলাপ এবং আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। এরপর দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়েরা মানুষেরা। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় ভারতও বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রিজওয়ান হাসান। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিজওয়ানা বলেন, ‘দুর্গাপূজা উপলক্ষে তারা (হিন্দু সম্প্রদায়) দুই দিন বা তার বেশি সময়ের জন্য সরকারি ছুটির দাবি করেছিল। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ইতিহাসে এই প্রথমবার আমরা তাদের দাবি শুনেছি এবং দুর্গাপূজার জন্য দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছি। তাদের হয়তো আরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে, তবে আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আমাদের দরজা সবসময়ই সংলাপ এবং আলোচনার জন্য খোলা’।
তিনি আরাে বলেন, ‘তবে যদি তারা কঠোর আন্দোলন করে, তাহলে বোঝা যায় যে, আরও বেশি সংলাপ এবং আলোচনা প্রয়োজন। তারা হয়তো এমন কিছু সমস্যার সমাধান চায়, যা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা সম্ভব। আমি মনে করি না রাস্তায় নামা প্রয়োজন, কারণ সমাধান যদি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আসে, তাহলে অন্য কোনও সরকার এটি ঠিক করতে পারবে না। এটি শুধু বাংলাদেশ সরকারই ঠিক করতে পারবে’।
‘বাংলাদেশ সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ ছিল এবং থাকবে জানিয়ে রিজওয়ানা বলেছেন, এবারের দুর্গাপূজা উদযাপনে সব উপদেষ্টারা নিমন্ত্রিত অথিতি হিসেবে অংশ নিয়েছেন। ভবিষ্যতে যে কোনো নায্য দাবি, সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে পূরণ হবে’।
অন্তর্বতীকালীন সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি আপনি লক্ষ্য করেন, কীভাবে এই বছর দুর্গাপূজা উদযাপন করা হয়েছে, আমরা সবাই সব উপদেষ্টারা বিভিন্ন মন্দিরে পূজা উদযাপনের সময় নিমন্ত্রিত ছিলাম। আমি নিজে ছয়টি মন্দিরে যাওয়ার জন্য দাওয়াত পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে একটি বাতিল করতে হয়েছে’।
‘তবে উপদেষ্টারা যারা সরকারে আছেন, তারা সবাই অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ ছিল এবং থাকবে। ন্যায্য যে দাবিগুলো রয়েছে, তা অবশ্যই সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে পূরণ করা হবে’, যোগ করেন তিনি।
Leave a Reply