অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতীয় সরকার অথবা বিপ্লবী সরকার গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি মনে করেন, মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়া উচিত।
‘ফ্যাসিবাদ–উত্তর বাংলাদেশে সংবিধান প্রশ্ন: মুজিববাদ নাকি জনমুক্তি?’ শীর্ষক সংলাপে মাহমুদুর রহমান এ কথা বলেন। আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংলাপের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সরকার গঠন করতে রাজি না হয়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারেন।
সংবিধান স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, সংসদ এসে ঠিক করবে, সংবিধান কী হবে।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান তিনি।
বাংলাদেশে ‘মুজিবুর রহমান’ নামই নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন মাহমুদুর রহমান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার ঘটনায় সাধুবাদ না জানানোয় বিএনপি ও জামায়াতের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
সংবিধানের ৭–এর ‘ক’ থাকলে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের পক্ষের শক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। এই সংবিধান মানলে স্পিকার না থাকলে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সংসদই নাই, তাহলে রাষ্ট্রপতিকে সরাবেন কী করে? আবার (সংবিধানের) ১০৬–এর সাহায্য নিতে হবে। তাহলে তো পদে পদে প্রতিদিন সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সের জন্য যেতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করে এই পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যদি চিরতরে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করতে হয়, তাহলে সংস্কারের জায়গায় আসতে হবে। আর অবশ্যই সেটা হতে হবে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে।
রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে বিএনপি সাংবিধানিক সংকটের কথা বলছে উল্লেখ করে এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান বলেন, সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলে রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। ফলে সাংবিধানিক সংকট দূর হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সংবিধানের ১০৬–এর আওতায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত চেয়ে সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলা করা যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির সঞ্চালনায় এই সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আ ন ম এহছানুল হক মিলন, সিঙ্গাপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।
Leave a Reply