তোমরা হয়তো জানো না, আমিই মাস্টারমাইন্ড!

মাস্টারমাইন্ড। এই একটি শব্দে মাতোয়ারা এখন পুরো বাংলাদেশ। কখনো গ্রামে‑গঞ্জে, আবার কখনো বিশ্বমঞ্চে দেখা মিলছে মাস্টারমাইন্ডের। কেউ কেউ আবার গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো নিজেকে মাস্টারমাইন্ড দাবিও করে বসছেন হরহামেশা। এটাই ট্রেন্ড, কী আর করা!

শব্দগতভাবে মাস্টারমাইন্ড বলতে বোঝানো হয় এমন একজন ব্যক্তিকে, যার অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা রয়েছে। কেমব্রিজ ডিকশনারি বলছে, মাস্টারমাইন্ড হলো তেমনই একজন ব্যক্তি, যে কিনা দুঃসাধ্য কার্যাবলীর (প্রায় সময়ই অপরাধমূলক) বিস্তারিত পরিকল্পনা করতে পারে এবং এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যেন সফল হয়, সেটি নিশ্চিত করে।

নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন, মাস্টারমাইন্ড আসলে কত বড় একটি বিষয়। এক্ষেত্রে কেমব্রিজ ডিকশনারির বলা ‘অপরাধমূলক’ শব্দটি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করুন প্লিজ। আপনার সাদা মনে কালো রাখবেন না! আর জানেনই তো, নিজের সুবিধায় প্রয়োজনে অনেক কিছুই ভুলে যেতে এ দেশের মানুষের বাধে না খুব একটা। কথায় তো আছেই, ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’। এই চাচাকে কত কিছুই যে করা লাগে!

এত আলাপ বাদ দেওয়া যাক। আসল হিসাবে ঢোকা হোক বরং। মাস্টারমাইন্ডের কিন্তু কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। সেগুলো জানতে পারলে, যে কেউ নিজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারে। কে জানে, হয়তো মেলানোর পর, দুরু দুরু বক্ষে, আপনার হৃদয়ের গহীন থেকে শুনতে পাবেন উচ্চস্বরে–‘তবে কি আমিই মাস্টারমাইন্ড!’

সুতরাং আগে লক্ষণগুলো জানা দরকার। মাস্টারমাইন্ড নিয়ে প্রায় ১০ বছর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি একটি লেখা প্রকাশ করেছিল। এখনও অনলাইনে পাওয়া যায়। পড়ে জানা গেল, মাস্টারমাইন্ড ব্যক্তিরা একটি বিশেষ ঘরানার ব্যক্তিত্বের অধিকারী হন। তাদের পরিকল্পনা করার সক্ষমতা বেশি থাকে। থাকে নতুন নতুন ধারণা সৃষ্টির ক্ষমতা। এরা প্রায়ই নেতা হয়ে যান। আবার কিছুটা চাপা স্বভাবেরও হন।

সব মিলিয়ে মাস্টারমাইন্ডদের দূরদর্শী হতেই হয়। তারা আগেভাগেই অনেক কিছু বুঝে ফেলতে পারেন। ভবিষ্যতে কী হবে, না হবে–তা আঁচ করতে পারেন তারা। সেই অনুযায়ী লক্ষ্য অর্জনেও এরা সচেষ্ট থাকেন।

আবার মাস্টারমাইন্ডরা স্বাধীনচেতা হন, নিজে নিজেই সব করে ফেলতে চান প্রায়ই। অদক্ষ লোকজন আশপাশে দেখলে এরা বিরক্তও হন বেশ।

এখন মাস্টারমাইন্ড বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া জাগানোর পর নেটিজেনরা মাস্টারমাইন্ড এর অর্থ বিশ্লেষণ করে অনেকে ঠাট্টা করে চায়ের কাপে বলতে চাচ্ছেন আগষ্ট এর মাস্টার মাইন্ড কি তাহলে হাসিনা।যিনি নেতাকর্মীদের ছাড়াই হুট করে ভারত পালিয়ে গিয়েছিলেন।আসলে বিষয়টি তেমন কিছুই নয়।সব দলগুলার মতামত স্পষ্ট।জুলাই আন্দোলনে একক কোন মাস্টারমাইন্ড নেই। আন্দোলনে ছাত্র জনতা সবাই মাস্টারমাইন্ড।

তাহলে আর দেরি কেন? সব লক্ষণ এভাবেই মিলিয়ে দেখে নিন, প্লিজ। এরপরই বুক ফুলিয়ে, মাথা উঁচু করে, লজ্জাবনত মুখে, ঈষৎ হাসি ঠোঁটে মেখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দিতে পারবেন। লিখতে পারবেন–‘তোমরা হয়তো জানো না…আমিই মাস্টারমাইন্ড ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *