মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা মওসুস সরকারের কাছে নির্বাচনী ও সাংবিধানিক সংস্কারের প্রস্তাব করেছে, যা রাষ্ট্রীয় এবং রাজনৈতিক পদে ব্যক্তির অবস্থানকাল সীমিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। সংস্থার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি), এবং রাষ্ট্রপতি পদে একই ব্যক্তি যেন পরপর দুইবারের বেশি দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, সেই বিধান চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, দলের সভাপতি বা সেক্রেটারি পদে কোনো ব্যক্তি তিনবারের বেশি থাকতে পারবেন না।
মওসুসের চেয়ারম্যান ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া এ বিষয়ে ২৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, যা নির্বাচন বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদারের কাছে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবে সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উত্থাপন করা হয়েছে। সংস্থার মতে, রাষ্ট্রীয় পদে ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখলে গণতান্ত্রিক কার্যক্রম ও সুশাসনের প্রতিফলন ঘটবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার কমবে।
এই প্রস্তাবনাগুলো কার্যকর হলে তা দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং স্বচ্ছতা আনতে সহায়ক হতে পারে বলে মওসুসের অভিমত।
একই ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে পরপর দুই বা তিন মেয়াদের বেশি কেউ থাকতে না পারে সেইজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনতে হবে এবং এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কার্যকরী ভূমিকা রাখবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপি পদেও দুইবারের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না।
এদিকে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নেতা নির্বাচন করা, রাজনৈতিক অপরাধের বিচারের জন্য পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনাল ও পলিটিক্যাল আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন সংশোধন, দলগুলোর মনোনয়ন বাণিজ্য রোধ, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়নে জাতীয় লিডারশিপ ইনস্টিটিউট গঠন, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভার প্রবর্তন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সৎ, যোগ্য সাহসী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় প্রভাবমুক্তকরণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়করণ, একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থাকরণ, এনআইডি ব্যবস্থাপনা ইসির অধীনেই রাখা,
তিন পার্বত্য অঞ্চলে তিন সংসদীয় আসন ও ঢাকার জন্য ১১টি আসন সংরক্ষণ করা, সকল প্রার্থীকে এক মঞ্চে এনে প্রচারের ব্যবস্থা, প্রার্থীদের সকল তথ্য ভোটারদের কাছে প্রকাশ করা, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রচলন, হলফনামা ও মনোনয়ন ফরম সংশোধন, প্রার্থী হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের ন্যূনতম তিন বছরের সদস্যভুক্ত থাকা, নির্বাচন কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, ব্যবসায়ীদের রাজনীতিতে আসার পথ সীমিত করার বিধান আনার জন্যও প্রস্তাব করা হয়েছে।
Leave a Reply