৭ নভেম্বর রাষ্ট্রীয়ভাবে ছুটি ঘোষণা করতে হবে: ফারুক

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন এবং রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করতে হবে।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা যেভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে, সেভাবেই গণতান্ত্রিক দিবসগুলোকেও দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে গেছেন। তাই দিবসটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদ আয়োজিত ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সরকারি ছুটি পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি দল যারা সবসময় চক্রান্তের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের হাতেই বারবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারাই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে নস্যাৎ করেছে। তারা সবসময় চায় সরকার পরিচালনার মাধ্যমে একটি বিশেষ দেশের পলিসি বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু বারবার এদেশের মানুষ সর্বশক্তি দিয়ে তাদের চক্রান্তকে প্রতিহত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন ৭৫ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত কিভাবে ভারতের এজেন্টরা এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করার জন্য চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। অবশেষে ৭ নভেম্বর এদেশের সিপাহী-জনতা সেই চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং তাদের চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেয়। এ কারণে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে।

তিনি বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান, আপনারা দ্রুত নির্বাচন দিন। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত প্রতিহত করার জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচিত সরকারের খুব প্রয়োজন। আমরা কখনই ২০১৪ সালের মতো ১৫৩ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করতে চাই না, অথবা ২০১৮ সালের নৈশকালীন নির্বাচনের মতো অনির্বাচিতভাবে জয়যুক্ত হতে চাই না। আমরা চাই ভোট বঞ্চিত জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের প্রিয় ব্যক্তিদের নির্বাচিত করুক এবং তাদের যোগ্য ব্যক্তিরা দক্ষতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করুক।

তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং তিনি দ্রুত বাংলার মানুষকে বহুদলীয় গণতন্ত্র উপহার দেন। শহিদ জিয়া দেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেন। ৭ নভেম্বর পালনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থেই জিয়াকে স্মরণ করা হবে।

সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তোমার পতন হয়েছে। তোমার বাবা বাংলাদেশকে বলতো ‘আমার দেশ’ আর তুমি বলতে ‘আমার বাবার দেশ’। অথচ একটা স্বাধীন দেশকে তোমরা আরেক দেশের তাবেদার বানানোর সকল চক্রান্ত সম্পন্ন করেছো। দেশের মানুষ তোমার চক্রান্ত বুঝে ফেলেছে। তোমাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তুমি দিল্লির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছো। তোমার অশুভ প্রেতাত্মারা এখনো বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োজিত থেকে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে; কিন্তু তাদের জানা উচিত দেশের সচেতন জনতা সোচ্চার আছে। তাদের চক্রান্ত কখনই সফল হবে না।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, ৭ নভেম্বরের মতো ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে। তাহলে দেশের মানুষ দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের জানতে পারবে এবং স্বৈরাচারীদের ব্যাপারে সতর্ক ও সোচ্চার থাকবে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মো. রমীজ উদ্দিন রুমির সভাপতিত্বে আরাফাত রহমান আবিরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- ভিপি ইব্রাহীম, অ্যাডভোকেট মো. রবিউল ইসলাম রবি, এম জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী, জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি ও দৈনিক খোলাবাজার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, জাগ্রত বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, মো. ইব্রাহীম হোসেন ও মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *