চব্বিশের আন্দোলনকারীদের ‌‌‌‘টোকাই’ বলে তোপের মুখে আওয়ামী লীগ নেতা!

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও হল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম এ মুঈদ ফারুক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের টোকাই ও অভদ্র বলে কটাক্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এদের দিয়ে কীভাবে দেশ চালাবেন?’

জুড়ী উপজেলার তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে শনিবার (২ অক্টোবর) বিএনপি সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরী শিক্ষা ও সেবা ফাউন্ডেশনের পক্ষে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিও-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তার সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিরাপদ নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মুঈদ ফারুক আরও বলেন, ‘যদি তিনি জানতেন এ দেশ এককালে রাজাকারের দেশ হবে। তাহলে তিনি মুক্তিযুদ্ধ না করে রাজাকার হয়ে যেতেন। কেন স্বাধীন দেশে শিক্ষার্থীরা রাজাকার স্লোগান দেবে?’

উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘দেশে আগে কোনো বৈষম্য ছিল না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররাই তো এ বৈষম্য তৈরি করছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন এসেছে সমন্বয়ক। এই চ্যাংড়া পাংড়া টোকাই পোলাপাইন যদি দেশ চালায়, তাহলে তোমরা লেখাপড়া করে কী করবে?’

মুঈদ ফারুক শিক্ষার্থীদের আরও বলেন, ‘তোমরা কোন দিন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেলে ছাত্র রাজনীতিতে জড়াবে না। ইউনিভার্সিটিতে কোন রূপ আন্দোলন শুরু হলে তোমরা সোজা বাড়িতে চলে আসবে। ঢাকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেখো ওরা কি সভ্য নারী? এগুলো সভ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।’

এ সময় সংবর্ধনা সভায় বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার জহরত আদিব উপস্থিত ছিলেন।

তার বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফেসবুকে মো. মনির খান নামে আইডি থেকে একজন লিখেছেন, যে বা যারা তাকে দাওয়াত দেন তারও তারই মতো লোক। যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা নিঃসন্দেহে সুকৌশলে আওয়ামী লীগের দালালি করে।

আজিজ কিবরিয়া নামে একজন লিখেছেন, উনারা হতাশ। কারণ এ আন্দোলনের নেতৃত্বকে লোভ বা ভয় দেখিয়ে কাবু করতে পারেনি। পারেনি জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করেও। তাই উনারা সব হারিয়ে নিঃস্ব। এখন এটাকে পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কি বলা যায়?

অনেকে তাকে ফ্যাসিবাদের দোষর আখ্যা দিয়ে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *