ওবায়দুল কাদেরের বহিষ্কার হওয়ার খবর!

১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করা কাদের নোয়াখালী-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সপ্তম, নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন।

শেখ হাসিনার একান্ত বিশ্বাসভাজন হিসেবে প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২১তম সম্মেলনেও তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন।

২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ২২তম সম্মেলনেও তিনি টানা তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত হন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন।২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার প্রবল জনরোষের মুখে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করলে,তারপর কাদের আত্নগোপনে রয়েছেন।কখনো তিনি ভারতেই রয়েছেন,আবার কখনো হংকং কিংবা সিঙ্গাপুরে রয়েছেন এমন কথা শুনা গেলেও আসলে তিনি কোথায় আত্নগোপনে রয়েছেন,তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি।

সম্প্রতি বাংলা অ্যাফিয়ার্স নামে একটি অনলাইন পোর্টালে বহিষ্কার হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের! এমন একটি প্রতিবেদন উঠে আসার পরই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে উঠে আসে ওবায়দুল কাদের ইস্যু।প্রতিবেদন বলছে,সাধারণ সম্পাদক হিসাবে হ্যাট্রিক করা সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সোনালী দু:সময়ের নেতা হিসাবে তার অবদান রাখলেও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তিনি ছিলেন চরম সমালোচিত।

সাধারণ সম্পাদক হিসাবে খোদ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই তিনি ছিলেন চরম বিতর্কিত এবং অহংকারী। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ওবায়দুল কাদের বহিষ্কার হচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শেখা হাসিনার কাছে কাদেরের বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। তিনিও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন।

দলের মধ্যেই শুদ্ধি অভিযান জরুরি।তারা মনে করছেন হাইব্রিড মুক্ত আওয়ামী লীগ নিয়েই ফিরতে হবে ঐতিহ্যবাহী দলটিকে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাওয়া হিসাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে যেকোনো মুহুর্তেই বহিষ্কার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দলটির একাধিক বিশস্ত সূত্র।

কাদের পলাতক থাকায় এ অবস্থায় তাকে কিভাবে বহিষ্কার করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবছে দলের হাই কমান্ড। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জন মানুষের দল। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদককে যদি ‘স্যার’ বলে সম্ভোধন করতে হয়; এটা আমাদের জন্য লজ্জার এবং বিব্রতকর।তিনি নানা সময়ে বেফাঁস কথা বলে দলকে বিপদে ফেলেছেন।

দলের পতনের আগেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এককভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ বানিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের অধ:পতনের নেপথ্যে খলনায়কদের মধ্যে ওবায়দুল কাদেরকেই শীর্ষে রাখছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। রমনীমোহন ওবায়দুল কাদেরদের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক কেলেংকারির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সরব উপস্থিতি দেশের সাধারণ মানুষ থেকে আওয়ামী লীগেরই অনেক নেতাকর্মীকে বিনোদনের খোরাক দিতো।

সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তাকে ‘কাউয়া’ হিসাবে স্লোগান শুনতে হয়েছিল তৃণমূলের কাছ থেকে। মজার তথ্য, তিনি গত বছর বলেছিলেন; আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব’—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি এ কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

নিজ দলের মধ্যে তিনি আরেকটি উপদল করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার দলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কমপক্ষে ২২-২৫ জন রয়েছেন। তাদের বিষয়েও নতুন করে ভাবতে হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *