ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন মার্কিন জনগণ। এরই মধ্যে বেশির ভাগ রাজ্যে ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয়েছে গণনা। কয়েকটি রাজ্যে বুথ বন্ধ হবে আর কয়েক ঘণ্টা বাদেই। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বুথফেরত জরিপ থেকে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে ভালোই টক্কর দিচ্ছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা। বড় স্টেটগুলোতে জিতে এরই মধ্যে ব্যবধান বেশ কমিয়ে এনেছেন ডেমোক্র্যাটদের কাণ্ডারি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়তো আক্ষেপেই পুড়তে হবে তাকে। সুইং স্টেটগুলোতে জিতে ট্রাম্পই সম্ভবত ফের হস্তগত করতে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউসের চাবি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের আপডেট অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৩০টি ইলেকটোরাল ভোট জিতে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে খুব বেশি পিছিয়ে নেই তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসও; পেয়েছেন ২১০টি ইলেকটোরাল ভোট। এ হিসেবে হোয়াইট হাউসের প্রবেশদ্বার থেকে আর মাত্র ৪০টি ইলেকটোরাল ভোটের দূরত্বে আছেন ট্রাম্প আর কমলা আছেন ৬০টি ভোটের দূরত্বে।
সময় গড়াতে গড়াতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে পার্থক্য হয়তো আপাতত অনেকটাই কমে এসেছে; কিন্তু ব্যবধান গড়ে দিতে যাচ্ছে সাতটি সুইং স্টেটের ফলাফল, যেখানে এরই মধ্যে নর্থ ক্যারোলিনায় জিতে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের আপডেট দেখাচ্ছে, সুইং স্টেট খ্যাত পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিনে ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। স্টেটগুলোর সবশেষ বুথফেরত জরিপ তার জয়ের আভাসই দিচ্ছে। মোট ৩৪টি ইলেকটোরাল ভোট স্টেট তিনটিতে। এর মধ্যে পেনসিলভানিয়াতে ১৯টি, মিশিগানে ১৫ এবং উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট আছে। এ ছাড়া জর্জিয়াতেও জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন ট্রাম্প। ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে এ স্টেটটিতে। অন্য দুই সুইং স্টেট অ্যারিজোনা ও নেভাদায় ভোটগ্রহণ শেষ হতে এখনও অনেকখানি সময় বাকি। যথাক্রমে ১১টি ও ৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে।
তবে হিসাব অনুযায়ী, এগিয়ে থাকা চারটি সুইং স্টেটে জিতলেই হোয়াইট হাউসের দরজা আবারও খুলে যাবে ট্রাম্পের জন্য। আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসবে লাল শিবির, তথা রিপাবলিকান পার্টি। ফলে অনুমিতভাবেই কপাল পুড়তে যাচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হতে যাচ্ছে কমলার।
এনবিসির জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ শতাংশ ভোটার অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপরই আস্থা রাখছেন। যেখানে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন ৪৭ শতাংশ ভোটার। একই জরিপ অনুযায়ী আবার ৭২ শতাংশ ভোটার দেশের অবস্থা নিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’।
মূলত, বাইডেনের চার বছরের শাসনামলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মসংস্থানের সংকট সৃষ্টির পাশাপাশি অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে পড়ে গেছে জীবনযাত্রার মান। অন্যদিকে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও অভ্যন্তরীণ কিছু নীতির কারণেও সেখানকার মুসলমান নাগরিকরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন ডেমোক্র্যাটদের প্রতি। বাইডেন প্রশাসনের বিগত দিনের ভুলগুলোর খেসারতই কমলাকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Leave a Reply