শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি। কোনো কারণে এ কিডনি বিকল হলে অকালেই মুত্যুর মুখে ঢলে পড়তে হয়। তাই বিকল হওয়ার আগেই জেনে নেয়া ভালো, শরীরে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি সুস্থ আছে কি না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগাম কোনো লক্ষণ দেখে প্রাথমিকভাবে কিডনির অসুস্থতা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। আর এ কারণে সঠিক সময়ে কিডনির অসুখ নির্ণয়ও করা যায় না। আর যখন কিডনি একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়, তখন উপসর্গ স্পষ্ট হতে শুরু করলেও রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয় না।
তাই কিডনির সুস্থতা নিশ্চিতে দ্রুত করিয়ে নিতে পারেন দুটি টেস্ট। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্যানুযায়ী, এসিআর ও জিএফআর’ এর মতো দুটি সাধারণ টেস্ট করালেই ধরা পড়বে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।
১। মূত্র পরীক্ষা বা এসিআর হলো অ্যালবুমিন ও ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত। অ্যালবুমিন হলো বিশেষ ধরনের প্রোটিন। মূত্রে অ্যালবুমিন আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। আমাদের শরীরের যেহেতু প্রোটিন রয়েছে সেক্ষেত্রে রক্তেও প্রোটিন স্বাভাবিক। তবে এই প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা নয়।
যদি এসিআর পরীক্ষায় প্রোটিন পাওয়া যায়, তার মানে কিডনি ঠিকঠাকভাবে রক্তকে ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্টে প্রোটিন পজিটিভ হলে, নিশ্চিত হতে তার এনএফআর করাতে হবে। যদি, তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তবে তা কিডনি রোগের লক্ষণ।
২। জিএফআর কাউন্ট করতে রক্ত পরীক্ষা করা জরুরি। কিডনি খারাপ হলে, তা রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিন অর্থাত্ বর্জ্য পদার্থ ঠিক মতো বের করে দিতে পারে না। তবে, এই ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হলো প্রথম ধাপ। এরপর গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট বা জিএফআর দেখতে হবে।
সেই রেজাল্ট দেখেই ডাক্তার বুঝতে পারবেন আপনার কিডনি কেমন কাজ করছে? কিডনি নিয়ে তাই কোনোরকম ভয় হলে, অযথা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে, এই পরীক্ষাগুলো করে নিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে বেশি। এছাড়া যাদের বংশে কিডনির রোগী রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও বেশি ঝুঁকি রয়েছে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার। অন্যদিকে যাদের এসব কোনো সমস্যা নেই তাদের সুস্থতা নিশ্চিতে বয়স ৬০ বছর পার হলেই বছরে দুইবার কিডনি পরীক্ষা করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply