ঝিনাইদহের মহেশপুরে চাঞ্চল্যকর শাহাজান কবিরাজ হ’ত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ। হ’ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি রাজুকে মহেশপুরের খালিশপুর বাজার থেকে গ্রেফতারের পর এই হ’ত্যার রহস্য উন্মোচিত হলো। মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল শনিবার দুপুরে এ খবর নিশ্চিত করেন।
ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল আরো জানান, স্ত্রী ধ’র্ষ’ণের প্রতিশোধ নিতে শাহজাহান আলী কবিরাজকে গলা কেটে হ’ত্যা করেন রাজু নামে এক যুবক। রাজু যশোরের চৌগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় আসামি রাজু ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে গত বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে আসামি রাজু বলেন, তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। কবিরাজ হওয়ার সুবাদে শাহজাহান আলীকে তিনি দাদু বলে ডাকতেন। ভালো সম্পর্ক থাকায় মহেশপুরের বামনগাছার বেলেমাঠ গ্রামে শাহাজানের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। গত ৮ মে স্ত্রীকে নিয়ে শাহজাহান কবিরাজের বাড়িতে যান। সেখানে ২/৩ দিন থাকার পর চলে আসতে চাইলে দাদু বলেন তোর দাদি তো অসুস্থ। তোর বউকে কয়েক দিনের জন্য রেখে যা। আমার রান্না-বান্না করে খাওয়াবে। দাদুর কথা অনুযায়ী আমি স্ত্রী ও তিন বছরের বাচ্চাকে তার কাছে রেখে ঢাকায় চলে আসি।
ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আসামি রাজু আরো জানান, গত ১৫ মে রাত ১০টার দিকে আমার স্ত্রীকে ফোন করি। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি। এরপর দাদু শাহজানকে ফোন করি। তিনিও ফোন রিসিভ করেননি। ঘটনার দিন রাত প্রায় ৩টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করলে সে ফোন রিসিভ করেই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে স্ত্রী জানায়, দাদু তাকে ধ’র্ষ’ণ করেছে। পরদিন ১৬ মে স্ত্রী-বাচ্চাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। ঢাকা থেকে রাজু বাড়ি ফিরে মামলা করতে চাইলে স্ত্রী নিষেধ করে বলেন, মামলা করলে মান-সম্মান যাবে। ২৮ মে (বুধবার) রাতে চাচাতো ভাই রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে রাজু দাদু শাহাজানের বাড়িতে হাজির হন এবং রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রাত আড়াইটার দিকে দাদুর ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে গলাকেটে হ’ত্যা পালিয়ে যান।
মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে হ’ত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজুকে বুধবার সন্ধ্যার আগে খালিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তিনি ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রাজু শাহাজাহান ফকিরকে গলা কেটে হ’ত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের বামনগাছার বেলেমাঠ পাড়ার শাহজাহান আলী কবিরাজকে (৬৫) নিজ বাড়িতে গলাকেটে হ’ত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রাফিজা খাতুন বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply