ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল এবং আকার বাড়ানো হয়েছে। তবে উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
রোববার (১০ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সারজিস আলম।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টা জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই ! তার উপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে!’
এর আগে রোববার উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল এবং আকার বাড়িয়েছে সরকার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন তিন উপদেষ্টাকে শপথ পাঠ করান। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়া দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশীরউদ্দিনের বিরুদ্ধে বঙ্গভবনের সামনে মশাল মিছিল করেছে গণ-অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
মশাল মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা শেখ বশীরউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে তাকে আখ্যায়িত করেন। তারা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে শেখ বশীরউদ্দিনের জায়গা পাওয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া। অবিলম্বে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে শেখ বশীরকে সরিয়ে দিতে হবে।
এদিকে, একইদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে উপদেষ্টাদের দফতর পুনর্বণ্টনের তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তবে দফতর পুনর্বণ্টনের পর তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন।
অন্যদিকে সালেহ উদ্দিন আহমেদ অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এখন থেকে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। অধ্যাপক আসিফ নজরুল উপদেষ্টা হিসেবে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। দফতর বণ্টনের পর তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন।
ব্রি. জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন উপদেষ্টা হিসেবে বস্ত্র, পাট ও নৌ-পরিবহনের দায়িত্বে ছিলেন। এখন তাকে নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা হাসান আরিফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এখন থেকে তিনি ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া আলী ইমাম মজুমদার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। এখন থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আর উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ মাহমুদ সজীব যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এখন থেকে তিনি যুব ও ক্রীড়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শেখ বশিরউদ্দীনকে। তবে এখনও কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি মাহফুজ আলমকে।
Leave a Reply