২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন শ্রেণির একাধিক বই পরিমার্জন হচ্ছে। সেখানে ইতিহাস-সংক্রান্ত বই বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ে’ স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, বিগত সরকারের সময়ে ইতিহাসকে এককেন্দ্রিক করে ফেলা হয়। সে কারণেই এবার পরিমার্জন হচ্ছে।
এ ছাড়া যার যতটুক অবদান সেই অনুযায়ী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীসহ অন্যরাও স্থান পাবেন। আর বাংলা সাহিত্যে ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান’ আবু সাঈদ ও মুদ্ধের গল্প এবং আন্দোলনের গ্রাফিতিও অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্যদিকে একাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক জাফর ইকবালসহ চারজন লেখকের লেখা বাদ দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা যখন সরকারে ছিল, তখন পাঠ্যপুস্তকের পরিমার্জন করেছে। নিজেদের মতাদর্শ সূক্ষ্মভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়েছে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে করা হয়নি। ফলে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সরকারের যাত্রা আর বিদায়ের মতো পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস-সংক্রান্ত তথ্য হয় অন্তর্ভুক্তি না হয় বাতিল হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঠিক ইতিহাসটা পাঠের সুযোগ দিতে হবে। একই বিষয়ের ইতিহাস বারবার পরিবর্তন হলে তারা বিভ্রান্ত হয়। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
যা যা পরিবর্তন হচ্ছে
চতুর্থ শ্রেণি থেকে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য হিসেবে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বইয়ে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই বইয়ের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অধ্যায়ে ‘২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা’ অংশ পরিবর্তন করে ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা হিসেবে উল্লেখ করা হতে পারে। আর টেক্সট হতে পারে ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২০০ আর ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবার স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বইয়ের বিভিন্ন গল্প ও উপন্যাসও পরিমার্জন করা হচ্ছে। যে এতে শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর প্রবন্ধ ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও মহাদেব সাহার লেখাও বাদ পড়ছে।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলা সাহিত্যে ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ যোগ করা হয়েছে। থাকবে একটি কবিতাও। এ ছাড়া যুক্ত করা হবে আন্দোলন চলাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অঙ্কিত গ্রাফিতি। বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় বিভিন্ন ধর্মীয় বাণী, চিরন্তন সত্য প্রবাদ থাকবে।
অন্যদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ বাদ দিয়ে ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধ ও বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা ‘গৃহ’ গল্প বাদ দিয়ে ‘অর্ধাঙ্গী’ গল্প সংযোজন করা হবে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply