অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ২০১০ সালে বেগম খালেদা জিয়ার একটি পুরোনো সংসদ বক্তব্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে ওই সময় জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বক্তব্যে, ড. ইউনূসের নোবেল জয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ইউএস কংগ্রেশনাল অ্যাওয়ার্ড অর্জনের জন্য তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যা আমাদের জাতীয় গর্বের বিষয়।”
তিনি বলেন, “স্বদেশে যেভাবে ড. ইউনূস নিগৃহীত হচ্ছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও আজ হুমকির মুখে পড়েছে।” খালেদা জিয়া আরও বলেন, “সরকার নিয়োজিত কমিশন গ্রামীণ ব্যাংককে ভেঙে ১৯ টুকরো করার সুপারিশ করেছে, যা আমাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রামীণ ব্যাংককে ধ্বংস করে ফেলবে।”
গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম এবং নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, “সরকার যদি এ ব্যাংকটির ওপর প্রতিশোধমূলক চক্রান্ত চালিয়ে তাকে ধ্বংস করতে চায়, তাহলে তা দেশের জনগণ মেনে নেবে না।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস করা সহজ, কিন্তু এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা অনেক কঠিন কাজ।” তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব আরোপের চেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেন এবং প্রশ্ন রাখেন, “সরকার কি গ্রামীণ ব্যাংককেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মতো লুটপাটের জায়গায় পরিণত করতে চায়?”
খালেদা জিয়া আরো বলেন, “যারা জাতির জন্য সম্মান বয়ে আনেন, তাদের দেশে সম্মান পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, নয়তো দেশ মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।”
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দীর্ঘ এক যুগ পর ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে যান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে, ড. ইউনূস খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ফেসবুক পেজে এই ভিডিওটি শেয়ার করেন।
Leave a Reply