প্রতিষ্ঠার এক যুগ পরও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। এ কারণে তালতলায় ক্লাস করতে (পাঠগ্রহণ) বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫টি বিভাগেরই নিজস্ব কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই। প্রতি বিভাগের কমপক্ষে ৩-৪ টি কক্ষের প্রয়োজন।
অথচ ববিতে মোট শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র ৩১টি। এর মধ্য থেকে ১৫টি বিভাগকে মৌখিকভাবে একটি করে শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই শ্রেণিকক্ষও অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় সময় অপচয়ের কারণে প্রতিদিন নির্ধারিত ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পাঠদানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাগান-মুক্তমঞ্চেও ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। তাই নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
তথ্যমতে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এই শিক্ষার্থীদের পাঠদানে দুটি অ্যাকাডেমিক ভবনে রয়েছে মাত্র ৩১টি শ্রেণিকক্ষ। এ কারণে সময় অপচয়, চরম দুর্ভোগসহ সেশনজটে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। সিলেবাস শেষ করতে পরপর তিনটি ক্লাস নিতেও দেখা গেছে শিক্ষকদের। ফলে শতভাগ শেখার পরিবেশ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী বদরুজ্জামান বলেন, এক ব্যাচের ক্লাস হলে অন্য ব্যাচ দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় দেখা যায়, একটা ক্লাস অ্যাকাডেমিক ভবনে অন্যটা প্রশাসনিক ভবনে। এছাড়া ক্লাসরুমের সংকট তো আছেই। তার ওপর প্রতি বছর আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করায় সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সঠিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। যেটার ফলপ্রসূ সমাধান জরুরি।
ববির বাংলা বিভাগের প্রভাষক তাইয়্যেবুন নাহার মিমি বলেন, ববিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট বহুদিনের। তাই সেশনজট এড়াতে নিয়মিত পাঠদান নিশ্চিতে অনেক শিক্ষকই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ক্লাস নিয়ে আসছেন।
কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন তানভীর কায়সার বলেন, ক্লাসরুমের সংকট রয়েছে এটা সত্য। আমাদের শিক্ষকরাও এক রুমে তিনজনের বসতে হয়। এর জন্য অবকাঠামো নির্মাণ জরুরি। তবে নিয়ম অনুযায়ী ৯-৫টা পর্যন্ত ক্লাস শিডিউল বণ্টন থাকে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষকদের। তবে ক্লাসরুমে সংকটের জন্য বাংলা বিভাগের শিক্ষক বাইরের খোলা জায়গায় ক্লাস নেয় বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণে পরিকল্পনা রয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। যতদিন এই ভবন নির্মাণ হচ্ছে না, ততদিন বিভিন্ন কৌশলে বিষয়টি মোকাবিলা করছি।
Leave a Reply