আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মাকেন এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি চৌকিতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে চালানো এই হামলায় অন্তত ১৬ জন সেনা সদস্য নিহত এবং আরও পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার বিবরণপাকিস্তানি তালেবান (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, তাদের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই আক্রমণ চালানো হয়েছে।
স্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, মধ্যরাতে প্রায় ৩০ জন সশস্ত্র তালেবান সদস্য তিন দিক থেকে সেনা চৌকিতে আক্রমণ শুরু করে। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে চৌকির ওয়্যারলেস যোগাযোগ সরঞ্জাম ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ধ্বংস করা হয়। সন্ত্রাসীরা চৌকি থেকে মেশিনগান, নাইট ভিশন ডিভাইসসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ছিনিয়ে নিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান সহিংসতাএই হামলা পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার অংশ। তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসলামাবাদভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। চলতি বছরও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে বছরের শেষ প্রান্তে হামলা এবং হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
নভেম্বরের ভয়াবহতাডন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে পাকিস্তানজুড়ে ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২৪৫ জন নিহত হন। এতে ৬৮ জন নিরাপত্তা কর্মীও অন্তর্ভুক্ত। আগস্ট মাসে এই সংখ্যা ছিল আরও বেশি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়াএখনও পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানি তালেবানের হামলা মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিসীমান্তবর্তী অঞ্চলে তালেবানের কার্যক্রম এবং সন্ত্রাসী হামলার তীব্রতা পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও সংকটময় করে তুলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এবং পাকিস্তানের মধ্যে নিরাপত্তা সমন্বয়ের অভাব এই সহিংসতার অন্যতম কারণ।
Leave a Reply