সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইয়াছমিন মিতু শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত দাবির দুইটি ভিডিও দেখা হয়েছে প্রায় ৪৯ লাখের অধিকবার। এছাড়াও ভিডিও দুটি প্রায় সাত হাজারের অধিকবার শেয়ার করা হয়েছে।
এ নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সারজিস আলমের বিরুদ্ধে সমন্বয়ক ইয়াছমিন মিতুর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। বরং ভিন্ন একজন নারীর পুরোনো ঘটনার ভিডিও থেকে অডিও সংগ্রহ করে তা প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে দৈনিক সমকালে মিতুর দেয়া একটি বক্তব্যের ভিডিওতে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক সমকালের ফেসবুক পেজে গত ১৬ ডিসেম্বর ‘স্বৈরাচারী আপা বিজয় দিবসকে এতদিন নিজের করে নিত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটিতে আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলের অবসানের পর তরুণরা বিজয় দিবস কেমন উপভোগ করেছেন সেটিই তুলে ধরা হয়েছে। ভিডিওর ৩ মিনিট ২ সেকেন্ড সময় থেকে অন্যান্যদের পাশাপাশি সমন্বয়ক মিতুকেও বক্তব্য দিতে দেখা যায়। মিতুর বক্তব্যের ফুটেজের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। উভয় ভিডিওতেই তার পরিহিত শাড়ি, গহনা এবং অঙ্গভঙ্গি অভিন্ন। তবে উক্ত ভিডিওটিতে তাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পরিবর্তে বিজয় দিবস নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
অর্থাৎ মূল ভিডিওতে আলোচিত অভিযোগ সম্বলিত অডিওটি ছিল না। পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির অডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে Jewel Jewelrana নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর শুরু থেকে ১৬ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ের বক্তব্যের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর বক্তব্য এবং কণ্ঠস্বরের মিল রয়েছে। অর্থাৎ, বিউটি নামের ভিন্ন এক নারীর বক্তব্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সমন্বয়ক ইয়াছমিন মিতুর ভিডিওতে যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিতু সারজিস আলমের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়, সম্পাদিত।
Leave a Reply