মাদারীপুরের কালকিনির বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর থেকেই পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, র্যাব এবং সেনাবাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আতাউর রহমান আক্তার শিকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি এলাকাবাসী আক্তার শিকদারের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেন।
শুক্রবার গভীর রাতে আক্তার শিকদার তার সমর্থকদের নিয়ে স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সমর্থকরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
সংঘর্ষে ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার (৪৮) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার ছেলে মো. মারুফ শিকদার (২০) এবং সহযোগী সিরাজুল চৌকিদার (৪৫) গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।
এই সংঘর্ষের পরপরই ভয়ে স্থানীয় পুরুষরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
শনিবার ভোরে সংঘর্ষপূর্ণ এলাকায় বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি।
কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নয়ন জানান, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, “বাঁশগাড়ী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও আমরা পুরোপুরি সতর্ক আছি।”
স্থানীয়রা জানান, তারা শান্তি চান এবং হানাহানি বন্ধ করতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতদের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের পর থেকে বাঁশগাড়ী এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় বর্তমানে সংঘর্ষ বন্ধ হলেও আতঙ্ক কাটেনি।
Leave a Reply