বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে দাবি জানিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। গত অক্টোবর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাসা থেকে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান (ফ্যাক্ট চেক) রিউমর স্ক্যানার। তাদের অনুসন্ধানে জান যায়, ভিডিওটি ভুয়া।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাড়িতে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলামের বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ প্রচার করে আলোচিত ভুয়া দাবিটি উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সারজিস সারজিস আলমের বাসায় ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। যে অবিশ্বাসের রাজনীতি শুরু করা হয়েছে সেই রাজনীতির দিকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এছাড়াও, এই ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা করতে দেখা যায়।
বিষয়টি যাচাইয়ে পরবর্তী অনুসন্ধানে Md Tarikul Islam নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ১৯ অক্টোবর ‘অবিলম্বে হামলাকারী খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির ৯ মিনিট থেকে ৯ মিনিট ৪২ সেকেন্ড অংশের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। জানা যায়, বক্তব্য প্রদানকারী এই ব্যক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ তারিকুল ইসলাম। উক্ত ভিডিওটির ৯ মিনিট থেকে তাকে বলতে শোনা যায়, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এ লড়াই শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। চতুর্দিকে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছে।
সারজিসের বাসায় ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
অবিশ্বাসের রাজনীতি শুরু করা হয়েছে। সে রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। আপনাদেরকে বুঝতে হবে, এই অভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের শক্ত নৈতিক মানদণ্ড না থাকলে তারা কখনোই এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে পারতো না।
অর্থাৎ, তিনি সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাড়িতে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেননি বরং তিনি তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে বলেছেন, এই অভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের শক্ত নৈতিক মানদণ্ড না থাকলে তারা কখনোই এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে পারত না। পাশাপাশি গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সারজিস আলম কিংবা হাসনাত আবদুল্লাহর বাসা থেকে কোনো অর্থ উদ্ধারের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুতরাং সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাড়িতে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে মো. তারিকুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
Leave a Reply