সিরিয়ায় ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসন সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগতদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছে। নতুন শাসন ক্ষমতায় আসার তিন সপ্তাহের মাথায় এ অভিযানে প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তথ্যদাতা, আসাদপন্থী যোদ্ধা এবং সাবেক সেনাসদস্য রয়েছেন।
আসাদপন্থীদের ওপর দমন-পীড়নসিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আবদেল রহমান জানিয়েছেন,
“এক সপ্তাহেরও কম সময়ে দামেস্ক, হোমস, হামা, তারতুস, লাতাকিয়া এবং দেইর এজোরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে।”অভিযানে আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক শাসকের তথ্যদাতা, ইরানপন্থী যোদ্ধা এবং সামরিক কর্মকর্তারা।
সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, হামা ও লাতাকিয়া প্রদেশে অভিযানের সময় আসাদপন্থী মিলিশিয়া সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও মৃত্যুদণ্ডঅবজারভেটরি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাবেক সামরিক বিচার বিভাগের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ কানজো হাসানের মতো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরাও রয়েছেন। সাইদনায়া কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দায়িত্বে থাকা কানজো হাসানকেও আটক করা হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে বন্দিদের নির্যাতন এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্য দেখা গেলেও এর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
নতুন প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিনতুন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আনাস খাত্তাব জানিয়েছেন,
“সাবেক শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতি ও অত্যাচার নির্মূল করে জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বচ্ছ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।”
বিদ্রোহের পটভূমিএইচটিএস নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা গত ৮ ডিসেম্বর দামেস্ক দখল করে দ্রুত আক্রমণ চালিয়ে আসাদ সরকারকে উৎখাত করে। আসাদকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হয়।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগঅভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বন্দিদের ওপর নির্যাতন এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যুদণ্ডের অভিযোগ নতুন প্রশাসনের কঠোরতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তবে প্রশাসন বলছে, এসব অভিযান স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।
সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ক্ষমতা সংহত করতে গিয়ে যেভাবে কঠোরতা প্রদর্শন করছে, তা দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a Reply