ছোট্ট শিশুর প্রশ্ন ‘আমার বাবার দোষ কি’

জৈন্তাপুরের সারী বালু মহাল থেকে চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বারকি শ্রমিক সভাপতি আমির আলি কর্তৃক দৈনিক কালবেলার জৈন্তাপুর প্রতিনিধি নাজমুল ইসলামকে হাত কেটে ফেলার হুমকির ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) জৈন্তাপুরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণে কলম বিরতি ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

### **শিশু হুজাইফার প্রতিবাদ সবার নজর কাড়ে** প্রতিবাদ সভায় নাজমুল ইসলামের তিন বছরের ছেলে হুজাইফা আহমদ সাজিদের উপস্থিতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দুই হাতে ধরে রাখা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, **”চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশ করা কি আমার বাবার দোষ?”**। তার এই প্রতিবাদমূলক উপস্থিতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে সমাজের বিবেকবান মানুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

### **ঘটনার বিবরণ** নাজমুল ইসলাম সম্প্রতি সারী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এর জেরে গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে বারকি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আমির আলি তাকে ফোন করে অশ্রাব্য গালিগালাজ ও দুই হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনার পর নাজমুল নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে জৈন্তাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

### **প্রতিবাদ সভা ও সংহতি** কলম বিরতি ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন জৈন্তাপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন জৈন্তাপুর অনলাইন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান করিম সাব্বির। এতে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য দেন: – এম এম রুহেল (জৈন্তাপুর অনলাইন প্রেস ক্লাব সভাপতি)

– আবুল হোসেন মোহাম্মদ হানিফ (জৈন্তাপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক)

– করিম মাহমুদ লিমন (গোয়াইনঘাট প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক)

– গোলাম সারওয়ার বিলাল (জালালাবাদ প্রতিনিধি)

– দুলাল আহমেদ রাজু (বাংলা টিভি প্রতিনিধি)

– মীর শোয়েব আহমেদ (জৈন্তাপুর প্রেস ক্লাব অর্থ সম্পাদক)

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও প্রতিনিধি।

### **বিএনপির সংহতি ও আশ্বাস** প্রতিবাদ সভায় জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। আব্দুল হাফিজ সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, **”সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাদের মুখ বন্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই। যারা এই ক্ষমতার অপব্যবহার করবে, তাদের প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত।”**

বিএনপির প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায়। এরপর সভাপতি ফয়েজ আহমেদ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

### **উপযুক্ত বিচারের দাবি** সভায় বক্তারা হুমকিদাতাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে উপযুক্ত বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করা হয়।

### **সমাজে গণমাধ্যমের ভূমিকা** প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণকারীরা উল্লেখ করেন, সাংবাদিকরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সমাজের সত্য তুলে ধরেন। তাদের হুমকি দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না। তারা আইনানুগ ও নৈতিক সমাধানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *