যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডশায়ারে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে ডাইনোসরের পায়ের ছাপের সবচেয়ে বড় এলাকা, যা ইতিহাসের এক বড় আবিষ্কার। এখানে প্রায় ২০০টি পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। এ ছাপগুলো ১৬ কোটি ৬০ হাজার বছর আগের। এসব পায়ের ছাপ দুটি ভিন্ন প্রজাতির ডাইনোসরের—তৃণভোজী সেটিওসরাস ডাইনোসর এবং মাংসখেকো মেগালোসরাস ডাইনোসর—হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই এলাকা, যা অক্সফোর্ডশায়ারের ডুয়ার্স ফার্ম কোয়ারিতে অবস্থিত, সেখানে বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরের চলাচলের পথের বিশাল একটি অংশ আবিষ্কার করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই চলাচলের পথটি সম্ভবত আরো বিস্তৃত ছিল, কারণ এখন পাওয়া অংশটি একমাত্র একটি ছোট অংশ মাত্র। সর্বাধিক দীর্ঘ পথটির দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার, যা এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের চলাচলের পথ।
এই আবিষ্কারের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোপ্যালিওন্টোলোজি বিভাগের অধ্যাপক কৃষ্টি এজার। তিনি জানিয়েছেন, এত বড় এবং দীর্ঘ পথের সন্ধান এটাই প্রথম, যা ডাইনোসরের চলাফেরার একটি বিস্ময়কর তথ্য দেয়া হয়।
ডাইনোসরের পায়ের ছাপের খোঁজ প্রথম পেয়ে যান কোয়ারির কর্মী গ্রে জনসন, যিনি মাটি খোঁড়ার সময় বেশ কিছু উঁচু মাটির স্তূপ দেখতে পান। প্রথমে তিনি এটিকে সাধারণ মাটির উঁচু স্তূপ বলে মনে করেছিলেন, কিন্তু পরে একে একে আরো কয়েকটি একই ধরনের স্তূপ দেখে তিনি সন্দেহ করেন। যে এগুলো ডাইনোসরের পায়ের ছাপ হতে পারে। আগের ১৯৯০-এর দশকের খোঁড়াখুঁড়িতে সেখানে ডাইনোসরের চলাচলের আরেকটি স্থান খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, যা জনসনকে আরো নিশ্চিত করে।
এই বিশাল আবিষ্কারে ১০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী এবং সেচ্ছাসেবক অংশ নিয়েছিলেন, যারা কোয়ারির খোঁড়াখুঁড়ির মাধ্যমে ৫টি ভিন্ন পথ আবিষ্কার করেছেন। এই পাঁচটি পথের মধ্যে চারটি পথেই তৃণভোজী চারপায়ে হাঁটা ডাইনোসরের পায়ের ছাপ রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ছিল ১৮ মিটার এবং পঞ্চম পথটিতে রয়েছে মেগালোসরাস ডাইনোসরের পায়ের ছাপ, যা দুই পায়ে হাঁটত।
এটি একটি ঐতিহাসিক আবিষ্কার এবং আগামী সপ্তাহে “ডিগিং ফর ব্রিটেন” টিভি সিরিজে এই আবিষ্কারটি দেখানোর কথা রয়েছে, যা আরো বিস্তারিতভাবে এই বিশেষ খোঁজকে তুলে ধরবে।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply