৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তবে গত ২৭ আগস্ট গুঞ্জন উঠেছিল গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।
এমন খবর ছড়িয়ে পড়লেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল কেউ এর সত্যতা নিশ্চিত করেননি। তখন থেকে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এরই মধ্যে এক উদ্ভট দাবি করে বসলেন রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘কুমড়া পটাশ’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া আরাফাত। সম্প্রতি নিউইয়র্ক বাংলা লাইফের এক টকশোতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে কিছু অবান্তর তথ্য জানান তিনি।
রাজনৈতিক অঙ্গনের দুর্গন্ধ আরাফাত বলেন, শেখ হাসিনা তার জীবনের বাকি সময় টুঙ্গিপাড়ায় কাটাতে চেয়েছিলেন। ৫ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরার দিক থেকে আসা বিপদকে অবহিত করার পর শেখ হাসিনাকে বলা হয়েছিল, যদি তিনি গণভবন না সরেন, তাহলে সুরক্ষা বাহিনী গুলি চালাবে। সেসময় শেখ হাসিনা বলেন, তিনি যদি বঙ্গভবনে না যেতে পারেন, তবে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাবেন।
মিথ্যাকে শিল্পে পরিণত করা আরাফাত দাবি করেন, শেখ হাসিনার ভারত যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না এবং তাকে জোর করে দেশের বাইরে পাঠানো হতে পারে এমন গুঞ্জন ছিল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে চাননি এবং ৪ আগস্টের পর তিনি বারবার বলেছেন, তিনি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যেতে চান।
তিনি আরো জানান, শেখ হাসিনার পরিবার, বিশেষত শেখ রেহানা এবং সজীব ওয়াজেদ জয়, তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা তাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানান, তিনি দেশ ছাড়বেন না আরাফাত বলেন, তখনকার পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত সংকটজনক এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাও ছিল, যা পরে ধীরে ধীরে সামনে আসবে।
অখ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে পরিচয় দিতেন আরাফাত। এছাড়া মূলত পরিচয় দেয়ার মত তার কোন যোগ্যতা নেই। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিজেকে বড় নেতা পরিচয় দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘নেশাগ্রস্ত’ প্রমাণ করার চেষ্টার মতো বাজে মন্তব্য করেন। ফলে ছাত্র-জনতার কাছে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয় রাজনৈতিক বিরোধীদের সাথে অসভ্য ও বর্বর আচরণকারী এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, চাপাবাজি করে টকশোতে কথা বলেই আওয়ামী লীগের বড় নেতা বনে যাই আরাফাত।দলের বড় নেতা সেজে বসলেও এতদিন একেবারে আত্মগোপনে ছিল সে।
আরাফাতের ব্যক্তি যোগ্যতা না থাকলেও মূলত ফ্যাসিস্ট হাসিনাপুত্র জয়ের বন্ধু পরিচয়ে নেতা বনে যায়। সে কাউকে মূল্যায়ন করত না অভিযোগ রয়েছে, জয়ের বন্ধু পরিচয় দিয়ে মোহাম্মদ এ আরাফাত ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ এ আরাফাতের বাবা মোহাম্মদ সেতাব উদ্দিন বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক ছিলেন। শহীদুল্লাহ কায়সার এবং পান্না কায়সারের মেয়ে শমী কায়সারকে ২০০৮ সালের ২৪ জুলাই বিয়ে করেন তিনি। ২০১৫ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর আরাফাত বিয়ে করেন শারমিন মুস্তারিকে। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট ও নীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।
Leave a Reply