৫ জানুয়ারি, ২০২৫-এ ঢাকা শহরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত একটি সেমিনারে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা স্থাপন নিয়ে সৌদি আরবের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের তেল রিফাইনারি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায়, যা শুধু বাংলাদেশে নয়, বরং পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে। এর মাধ্যমে সৌদি আরব বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাইছে।
এছাড়া, রাষ্ট্রদূত আরও বলেন যে, বাংলাদেশের সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক শুধু জনশক্তি রপ্তানি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। তিনি মনে করেন, দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে এটি একটি বড় সুযোগ হতে পারে। সৌদি আরবের এই পরিকল্পনা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে এবং ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারসহ পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
সৌদি রাষ্ট্রদূত অতীতের কিছু ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করেন এবং উল্লেখ করেন যে, অনেক বড় প্রকল্প বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর আটকে গেছে। তার মতে, এসব প্রকল্প ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে স্থগিত করা হয়েছিল। তিনি বিশেষভাবে একুয়াপাওয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু, সে সময় ওই প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, অতীতে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একটি যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ এবং সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করা হবে, যাতে দেশের আর্থিক উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হয়।
এ সময়, তৌহিদ হোসেন আরও উল্লেখ করেন যে, জনশক্তি রপ্তানির পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা যেতে পারে। তিনি সবাইকে আহ্বান জানান যে, আমাদের দেশের তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
Leave a Reply