মেজর ডালিমের বিরুদ্ধে ছিল ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ!

গত রোববার(৫ জানুয়ারি) সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলের এক লাইভে যুক্ত হন ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবারের হত্যার অভিযুক্ত মেজর ডালিম। সেখানে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের নানা বিষয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।

সোমবার ফেসবুক এক্টিভিস্ট নিঝুম মজুমদার তার নিজস্ব ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে একটি পোস্টে মেজর ডালিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দাবি তুলেন।

নিঝুম মজুমদার মেজর ডালিমের দুর্নীতির দাবি তুলে বলেন, একজন খুনীর বক্তব্য এই দেশে ইতিহাসের রেফারেন্স হয়ে গেলে সেটা কতটা ভয়াবহ এবং তার রিপারকেশন কি,সেটি বুঝবার জন্য পড়তে হবে অনেক। কিন্তু এই প্রজন্মের সে সময় কি আছে? তাদের সময় নেই। সংযুক্ত ঘটনাটি বিএনপি আমলের। ডালিমের গাড়ি এবং ডলার সংক্রান্ত দূর্নীতির তদন্ত শুরু হয় এই আমলেই। ছ্যাচড়া চোরের চুরির বর্ণনা দেখেন। হাইকমিশনের একটা চাকুরি পেয়েছিলো। সেই চাকুরি করতে গিয়েই চুরি। প্রথমে স্টাফদের বেতন চুরি তারপর হাইকমিশনের নামে শুল্ক মুক্ত গাড়ি কিনে কেনিয়াতে চড়া দামে বিক্রি। একই ঘটনা মদ বিক্রির ক্ষেত্রেও।

প্রমাণস্বরুপ নিঝুম মজুমদার বইয়ের কিছু অংশ শেয়ার করেন। ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস: ১৯৯৫’ বইয়ে মেজর ডালিমের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগের বর্ননা পাওয়া যায়। নিম্নে বইটির অংশটি তুলে ধরা হলো-

সেই বইয়ে লেখা আছে: ১৯৭৫) সালের বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর ডালিম-এর বিরুদ্ধে এক চাঞ্চল্যকর তদন্ত রিপোর্ট ১৩ই জুন ‘সংবাদ’-এ প্রকাশিত হয়। ডালিম ছিলেন কেনিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। সংবাদ-এর এই ভাষ্য মতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবদুল মোমেন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আশরাফ, মেজর (অব.) ডালিমের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য কেনিয়া যান। তারা মেজর (অব.) ডালিমকে ডেকে পাঠান। কিন্তু মেজর (অবঃ) ডালিম তাদের সামনে হাজির হননি। এই দু’কর্মকর্তা পরে দূতাবাসে বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত করেন। তদন্তে ধরা পড়েছে যে,Tourism guides

মেজর (অব.) ডালিম কেনিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে দায়িত্ব পালনকালে কূটনৈতিক সুবিধার আড়ালে বিনাশুল্কে ১৪টি পাজেরো জিপ আমদানি করে চড়াদামে নাইরোবিতে বিক্রি করেছেন। তিনি দূতাবাসের নামে বিপুল পরিমাণ মদ বিনা শুল্কে উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি রেটে নাইরোবিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যে বেতন ও ভাতা ডলারে পাঠানো হতো তা মেজর (অব.) ডালিম নিজের একাউন্টে জমা রাখতেন। সরকারি রেটে (বাজারের তুলনায় সরকারি রেট বেশ কম) পাঠানো এই ডলার তিনি খোলা বাজারে বিক্রি করে দিয়ে কেনিয়ার মুদ্রায় হাই কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা দিতেন। সরকারি রেটে পাঠানো ডলার বাজারে বিক্রি করে দিয়ে মেজর (অব.) ডালিম প্রায় ২৮ লাখ টাকা আর্থিক লাভবান হয়েছেন।

তদন্তে আরো ধরা পড়েছে যে, মেজর (অব.) ডালিম কেনিয়ার একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। আর্থিক কেলেঙ্কারীর জন্য সম্প্রতি কেনিয়া সরকার ব্যাংকটি বন্ধ করে দিয়েছে। মেজর (অব.) ডালিম তার পালক মেয়ে এবং ব্যক্তিগত কুকুরের যাবতীয় খরচ হাই কমিশন থেকে নিতেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *