বাংলাদেশকে ভারতের গোলাম করে রাখার সেই চুক্তিতে কি ছিল?

১৯৭১ সালের অক্টোবর ভারতের একজন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের পক্ষে অস্থায়ী সৈয়দ নজরুল ইসলাম ৭ দফা এক গোপনীয় চুক্তি সই করেন। জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি এ চুক্তি। মুজিবনগর সরকারের অনেকেই জানতেন না এ চুক্তির বিষয়। গোপন চুক্তির ৭ দফা হলো:

১. মুক্তিযুদ্ধ করেনি এমন কর্মকর্তাদেরকে চাকুরী থেকে অবসর দেয়া হবে। অভিজ্ঞ কর্মচারীর শূন্যতা পূরণ করবে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। লক্ষ করে দেখবেন, স্বাধীনতার পর বেশ কিছু সিভিল সার্ভিস অফিসার ঢাকায় ও বিভিন্ন জেলায় ডিসি হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন।

২. বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবে না।

৩. অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রার জন্য একটি প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী থাকবে, যা পরে রক্ষী বাহিনী হিসেবে গঠিত হয়েছিল। প্রশিক্ষণে ছিলেন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাগণ।

৪. ভারতের সেনাবাহিনী থাকবে বাংলাদেশে। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ হবে। ৭২ সনের নভেম্বর থেকে এর কাজ শুরু হবে।

৫. বাণিজ্যিক সমঝোতা ছিল খোলা বাজার প্রতিষ্ঠা করা। সীমান্তের তিন মাইল জুড়ে চালু হবে খোলা বাজার। কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। শুধু বছর শেষে হিসাব নিকাশ হবে। প্রাপ্য মেটানো হবে পাউন্ড, ষ্টার্লিং এর মাধ্যমে।

৬. বিদেশ বিষয়ে ভারত যা বলবে, তাই মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ, সাউথ ব্লকের এনেক্স হবে সেগুন বাগিচা। এক কথায় বলা চলে উল্লেখিত চুক্তি বলে ভারত বাংলাদেশের সামরিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ের কর্তৃত্ব পেয়ে যায়।

৭. পাকিস্তানের সাথে চুড়ান্ত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিবেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক সহপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পাবেন না। এ কারণেই জেনারেল ওসমানী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের দর্শকের ভূমিকা পালন করতে রাজী হননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *