বাংলাদেশে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফা শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হওয়া দেশকে ভয়াবহ ভবিষ্যতের সতর্কবার্তা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি বড় ভূমিকম্প হলে দেশের রাজধানী ঢাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটে চীনের তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়, যা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.১। এর উপকেন্দ্র ছিল তিব্বতের রিকাজে থেকে ১৬৩ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পে বাংলাদেশে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও, তিব্বতে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানির খবর মিলেছে। এই কম্পন চীন, ভারত, নেপালসহ চারটি দেশে অনুভূত হয়।
এর আগে, ৩ জানুয়ারি উত্তর-পূর্ব মিয়ানমারে ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ঢাকায় অনুভূত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভূমিকম্পগুলো ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী কম্পনের ইঙ্গিত দিতে পারে।
বাংলাদেশ ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকায় অবস্থিত এবং মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড-এর তথ্যমতে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বড় ভূমিকম্পের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। ঐতিহাসিকভাবে ১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে দেশে পাঁচটি সাত মাত্রার বেশি ভূমিকম্প ঘটেছে। তবে গত ৭৫ বছরে কোনো বড় ভূমিকম্প না হওয়ায়, ভূমিকম্পের শক্তি জমা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমিকম্প-নিরোধক নিয়ম মেনে তৈরি না হওয়া ভবন ও শিল্প প্রতিষ্ঠান এই বিপদকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
“নেচার জিওসাইন্স” জার্নালের একটি প্রতিবেদন বলছে, এমন একটি ভূমিকম্প ঘটলে এই অঞ্চলের ১৪ কোটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এছাড়া, অপরিকল্পিত ভবন, ভারী শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং গ্যাসক্ষেত্র মারাত্মক ধ্বংসের শিকার হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা দেশের ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নিয়ম মেনে চলা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন, নতুবা ভয়াবহ পরিণতি এড়ানো কঠিন হবে।
Leave a Reply