‘নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়াই!’
বিখ্যাত এই প্রবচনের বাস্তব চিত্র দেখছে যুক্তরাষ্ট্রের আড়ম্বরপূর্ণ শহর লস এঞ্জেলস।
মাত্র দুদিনে দাবানল কাটলো ১০ জনের প্রাণ, পুড়েছে ৫৫ হাজার একর জমি। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৬০০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। অক্লান্ত পরিশ্রমেও আগুন নিয়ন্ত্রণহীন। একেতে শুষ্ক আবহাওয়া, তীব্র বাতাস, তার উপর পানির সংকট, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আশপাশের রাজ্যগুলো। পুনরুদ্ধার ও পুর্নবাসনের সব খরচ বহনের আশ্বাস দিল ফেডারেল সরকার।
পাখির চোখে লস এঞ্জেলস, ঝাঁ চকচকে শহর, এখন যেন শ্মশান। যতদূর চোখ যায়, শুধুই ধোঁয়া, বশীভূত কিংবা আটপোড়া ঘরবাড়ি, গাছপালা।
দুদিনের দাবানলে বিখ্যাত মার্কিন এই শহর এখন পুরোপুরি রিক্ত। আগুনে পুড়ছে প্রায় ৫৫০০০ একর জমি, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৬০০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। পুড়েছে ১৫০০০ অবকাঠামো, একে বড় ধাক্কা বলছে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো। আশঙ্কা, গুনতে হবে ৮০০ কোটি ডলার বা তার চেয়েও বেশি।
দুর্যোগের মুহূর্তেও ঘটছে লুটপাট। আটক করা হয়েছে ২০ জনকে। কারফিউ জারির কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার ফেডারেল সরকার বলছে, আগুন তো রয়েছেই, সাথে চলছে লুটতরাজ। এ পরিস্থিতিতে এ ধরনের আচরণ অগ্রহণযোগ্য, সব মিলিয়ে কারফিউ জারির চিন্তা করা হচ্ছে, রাতের মধ্যেই হয়তো জারি হবে কারফিউ।
অগ্নিশিখার উচ্চতা ২০ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে, হেলিকপ্টার থেকে ছড়ানো হচ্ছে রাসায়নিক। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বলছেন, ভয়াবহ পানি সংকটে রয়েছেন তারা। তবে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও সহজে থামানো যেত না দাবানলের রুদ্রমূর্তি।
এ অবস্থায় সবাইকে ধৈর্য ধরে একতাবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
লস এঞ্জেলসের মেয়র কারেন ব্যস বলেন, এই মুহূর্তে একটি টিম হয়ে কাজ করতে হবে সবাইকে। ঐক্যের প্রমাণ দিতে হবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা ও পুনর্বাসন ত্বরান্বিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।
আগুন নেভাতে ক্যালিফোর্নিয়াকে সহযোগিতা করছে ইউটা, নেভাডা, পরিগণন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসনে আগামী ছয় মাসের সব খরচ বহন করবে ফেডারেল সরকার আশ্বাস প্রেসিডেন্টের।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, দাবানলের উদ্ধার কাজের সব খরচ সরকার বহন করবে। ধ্বংসাবশেষ সরানো, অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরিসহ, জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সবকিছু অন্তর্ভুক্ত হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে বলতে চাই, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যা প্রয়োজন করুন। তহবিল ফেডারেল সরকারের।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লস এঞ্জেলসের ছয়টি জায়গায় জ্বলছিল আগুন। আজ দুটি স্থানের কথা বলা হলেও, পরে জানানো হয় পাঁচ জায়গার কথা। ধারণা করা হয়, ক্যানেথ এলাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন ধরানো হয়েছে। এরই মধ্যে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকও করেছে পুলিশ।
Leave a Reply