জাতীয় সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদের নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০, নির্বাচন হবে বর্তমান পদ্ধতিতে। এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তারা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০৫টি। নির্বাচন হবে আনুপাতিক পদ্ধতিতে। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট আসন হবে ৫০৫টি। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে দূষণে শীর্ষে ঢাকা
সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র ঠেকাতে বা এক ব্যক্তির হাতে যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে না যায়, সে জন্য ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে বেশ কিছু সুপারিশ করবে এই কমিশন। পাশাপাশি বিদ্যমান সংবিধানের মূলনীতিতেও পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে শেষ মুহূর্তের কাজ করছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়াও নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনও প্রতিবেদন জমা দেবে বুধবার। কমিশনগুলোর পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে অন্য দুটি—বিচারব্যবস্থা ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চলতি মাসের শেষে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক সংস্কার কমিশন দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ আইনে সংশোধন আনার প্রস্তাব দেবে। দলীয় প্রভাবমুক্ত, যোগ্য ব্যক্তিদের একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কীভাবে নিয়োগ দেওয়া যায়, তার একটি রূপরেখা সেখানে থাকবে। দুদককে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করা এবং মর্যাদা বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ থাকবে। এখন দুদকে সচিব থেকে নিচের দিকে কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি ক্যাডারের প্রাধান্য রয়েছে। এখানে একটি ভারসাম্য আনার কিছু সুপারিশ থাকবে। জনবলের ন্যায্য সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণেও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ ও প্রক্রিয়ার কথা থাকবে। দুদকের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে একটি কাঠামোও প্রস্তাব করা হতে পারে। দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই–বাছাইয়ে দীর্ঘসূত্রতা ও অনিয়ম দূর করতে এ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন।
ক্ষমতা’ বাড়াতে চায় দুদক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের ঘোষণা দেয়। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ছয়টি কমিশন পূর্ণাঙ্গভাবে গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে গঠন করা ছয়টি কমিশন। আগামী মাসের শেষের দিকে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে কতটা ঐকমত্য তৈরি করা যাবে, তা নিয়ে কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করছেন। কারণ, নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গণে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ অবশ্য মনে করেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূর করা যাবে না, এমন নয়। তিনি বলেন, এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াত বা শিক্ষার্থীদের বয়ানে যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে, তা এমন কিছু নয় যে অতিক্রম করা যাবে না। সূত্র: প্রথম আলো।
Leave a Reply