বর্ণাঢ্য আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে। বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ব মোড়লের চেয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে বসবেন ট্রাম্প। আর এই আয়োজনে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে কোন কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সম্মানিত অতিথি হিসেবে দাওয়াত পাবেন, সেটা নিয়েও চলছে জল্পনাকল্পনা।
এখনো পর্যন্ত ট্রাম্পের দাওয়াত কার্ড এসে পৌঁছায়নি ভারত এবং বাংলাদেশে, পাকিস্তানও নেই এই তালিকায়। তবে সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, তাদের দাওয়াত কার্ড তালিকা অনুযায়ী শেষের দিকে। তাহলে কি এই আয়োজনে উপেক্ষা করা হচ্ছে বাংলাদেশ আর ভারতকে।
বাংলাদেশে যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, নির্বাচিত কোন সরকার এখনো নেই, সুতরাং ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিলেক্টিভ তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু মোদি প্রশাসন সবসময় ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্কের জানান দিয়ে আসছে।
নরেন্দ্র মোদি এখনো দাওয়াত না পাওয়ায় আলোচনা চলছে। তাহলে কি সম্পর্কের পারদ নিচে নামতে শুরু করেছে! কেননা ট্রাম্পের তালিকায় রয়েছে চীনের নাম। আর চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কখনোই মধুর ছিল না। গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল না যুক্তরাষ্ট্রেরও। তারপরেও, শি জিনপিং সবার আগেই নিমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন। কার্ডটির জন্য অপেক্ষায় রয়েছে দিল্লি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ ২০ জানুয়ারি। শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ঠিক করতে দিন-রাত কাজ চলছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। সারা বিশ্বের মানুষের আগ্রহ বাড়ছে এটা জানতে যে, কারা নিমন্ত্রণ পাচ্ছেন ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে। আমন্ত্রণ পাওয়া বিশ্বনেতাদের তালিকা জানতে উন্মুখ এখন বিশ্ব গণমাধ্যমও।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল হিলের বহুল প্রতীক্ষিত শপথ অনুষ্ঠান ২০ জানুয়ারি, রাত ১২:০০ টা বা ১০:৩০ টায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আটজন নেতা এই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা জানা গেছে।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের শপথে যারা দাওয়াত পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, এল সালভাদোর প্রেসিডেন্ট নাইট বুকেলে, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের মিলেই, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো, হ্যাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান আর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির জেলেনেস্কি।
মুখে যতই শত্রুতা থাকুক না কেন, ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে প্রথম যে কজন বিশ্বনেতা দাওয়াত পেয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রথম কাতারেই রয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না শি জিনপিং। তার বদলে কাকে পাঠানো হবে ওয়াশিংটন, তা নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। তবে জোর আলোচনা আছে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাংজো ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং-র নাম।
যদিও ট্রাম্প অ্যামিনেশনের আগ্রহ কাইজিকে ঘিরে। চীনে যাকে শি জিনপিং এর ডান হাত বলে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে, চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প যতই হুমকি ধামকি দিক না কেন, চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার দরজা খোলাই থাকছে। নিমন্ত্রণ সংক্রান্ত ঘটনাবলী তারই প্রমাণ দেয়।
ট্রাম্পের দপ্তর এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের ইনভাইটেশন ফুরিয়ে আসছে। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাওয়াত পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে। যার সাথে ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বলে দাবি করে দিল্লি। সেই মোদিও কি দাওয়াত পাবেন না! এই প্রশ্নের এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাদ দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, এখন পর্যন্ত এ নিয়ে সুনিশ্চিত তথ্য তাদের কাছেও নেই। ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মোদির দাওয়াত মিললেই জানানো যাবে গণমাধ্যমকে।
Leave a Reply