ভারতের কুম্ভমেলায় যে সন্ন্যাসিনীর সৌন্দর্যে মজেছেন ভক্তরা!

ভারতের প্রয়াগরাজে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। এই মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ বছরের মহাকুম্ভে সব মিলিয়ে ৪৫ কোটিরও বেশি ভক্তের সমাগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১২ বছর অন্তর প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলা হয়।

পুণ্যস্নানের জন্য ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজে জড়ো হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। শনিবার থেকেই সাধু-সন্ন্যাসিনী ভিড় করতে শুরু করেছেন মহাকুম্ভ মেলায়। তবে তাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে নজর কেড়েছেন, তিনি হর্ষা রিচারিয়া।

ইনস্টাগ্রামে হর্ষার ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ।

গত কয়েক বছরে দু’হাজারের বেশি পোস্ট তিনি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। তবে বছর দুয়েক আগে সন্ন্যাসিনীর জীবন বেছে নেন হর্ষা। আচার্য মহামণ্ডলেশ্বরের কাছে দীক্ষা নিয়ে সাধ্বী হন।
হর্ষাকে মহাকুম্ভের আসরে দেখে হইচই পড়ে গিয়েছে।

তার অনুরাগীদের দাবি, সত্যিই জাগতিক মোহমায়া ছেড়ে শান্তির খোঁজে আধ্যাত্মিকতার পথে পা বাড়িয়েছেন তিনি। যদিও নেটিজেনদের একাংশের মতে, পুরোটাই ‘লোকদেখানো’। নিজের অনুরাগীদের সংখ্যা আরও বাড়াতেই তিনি ‘সাধ্বী সেজে’ মহাকুম্ভের মেলায় ঘুরছেন।
তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, তিনি সত্যিই সন্ন্যাসিনীর জীবন গ্রহণ করুন বা না করুন, তার সৌন্দর্যে মজেছেন অনেকেই। তাকে নিয়ে কৌতূহলও তৈরি হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে।

কিন্তু কে এই হর্ষা? হর্ষার বাড়ি উত্তরখণ্ডে। অতীতে সঞ্চালিকা হিসাবে কাজ করতেন সাবেক এই ইনফ্লুয়েন্সার। পরিচয় দিতেন ‘অ্যাঙ্কর হর্ষা’ নামে। সামাজিকমাধ্যমে নিয়মিত সঞ্চালনার ছবি-ভিডিও পোস্ট করতেন।

হর্ষার দেশ-বিদেশে ভ্রমণের বহু ছবি তার ইনস্টাগ্রামে রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ব্যাংককের হুয়া হিন সিটিতে একটি ‘ডেস্টিনেশন’ বিয়ের আয়োজন করেছিলেন হর্ষা। এর পরে মিয়ানমারের মান্দালয় শহরেও একটি ‘ডেস্টিনেশন’ বিবাহের আয়োজন করেছিলেন তিনি।

তবে বছর দুয়েক আগে সন্ন্যাসিনীর জীবন বেছে নেন হর্ষা। আচার্য মহামণ্ডলেশ্বরের কাছে দীক্ষা নিয়ে সাধ্বী হন।
তার পর থেকে হর্ষা নিজের পরিচয় দেন ‘সমাজকর্মী এবং হিন্দু সনাতনী সিংহী’ হিসাবে। যদিও এখনও সঞ্চালিকা হিসাবে কাজ করেন তিনি। ইনফ্লুয়েন্সার হিসাবেও কাজ করেন।

তবে হর্ষাকে সাধারণত যে সব পোশাকে দেখা যায়, তার থেকে সম্পূর্ণ অন্য রূপে মহাকুম্ভে ধরা দিয়েছেন তিনি। সাধ্বীর পোশাক, কপালে তিলক এবং ফুলের মালা পরে রথে চড়ে মহাকুম্ভে পৌঁছান তিনি। সেখানে পৌঁছে একটি সাক্ষাৎকারে ৩০ বছর বয়সি হর্ষা জানিয়েছেন, তিনি সব কিছু ছেড়ে নতুন পোশাক পরেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার যা প্রয়োজন ছিল তা ছেড়ে দিয়ে এই পথ গ্রহণ করেছি। আমি অভ্যন্তরীণ শান্তির জন্য একজন সাধ্বীর জীবন বেছে নিয়েছি। অভিনয়, অ্যাঙ্কারিং থেকে বিশ্ব ভ্রমণ— যখন আপনি জীবনে অনেক কিছু পেয়ে যাবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে এর মধ্যে কোনওটাই সত্যিকারের শান্তি আনে না। যখন ভক্তি আকর্ষণ করতে শুরু করে তখন জাগতিক সংযোগ থেকে দূরে সরে যেতে ইচ্ছে করে। নিজেকে প্রার্থনা, স্তোত্র এবং ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিতে সমর্পণ করতে ইচ্ছা করে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *