সাহাবিরা কেন বেশি বেশি কিশমিশ খেতেন?

সাহাবিদের জীবনাচার সবসময়ই অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় হিসেবে বিবেচিত। তারা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করতেন। সাহাবিরা যে খাবারগুলো গ্রহণ করতেন, তার মধ্যে কিশমিশ ছিল অন্যতম। কিশমিশ ছিল সাহাবীদের খাদ্যতালিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কিন্তু কেন তারা এটি বেশি বেশি খেতেন?

কিশমিশের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

কিশমিশ আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি একটি ফল, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, আঁশ, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং নানা ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা এবং হজম শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকর। সাহাবীরা শারীরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং ইবাদত, যুদ্ধ ও দ্বীনি কাজকর্মে নিজেদের ব্যস্ত রাখতেন। তাই তাদের শক্তি ও স্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য কিশমিশ ছিল আদর্শ খাবার।

রাসুল (সা.)-এর পছন্দ

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর জন্য কিশমিশ ভিজিয়ে রাখা হতো এবং তিনি সেগুলো পান করতেন।’

প্রিয় নবী (সা.)-এর খাদ্যাভ্যাস সাহাবীরা অনুসরণ করতেন। রাসুল (সা.) কিশমিশ পছন্দ করতেন বলে সাহাবিরাও এটি বেশি বেশি গ্রহণ করতেন। কারণ, তারা বিশ্বাস করতেন যে নবীজির অনুসরণে রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা।

রোগ প্রতিরোধে কিশমিশের ভূমিকা

কিশমিশে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সাহাবিরা বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে ও শরীরকে সুস্থ রাখতে কিশমিশ খেতেন।

দ্রুত শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক

কিশমিশে প্রাকৃতিক শর্করা ও গ্লুকোজ থাকার কারণে এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। সাহাবিরা দীর্ঘ সময় রোজা রাখতেন, নামাজ ও জিহাদে অংশ নিতেন। তাই তাদের দ্রুত শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য কিশমিশ ছিল সহজলভ্য ও কার্যকর একটি খাবার।

হজমে সহায়তা

কিশমিশে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়তা করে। সাহাবিরা সহজে হজমযোগ্য ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতেন। কিশমিশ হজমশক্তি উন্নত করে, যা তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

সাহাবিরা কিশমিশ বেশি খাওয়ার পেছনে ছিল ইসলামিক সুন্নাহ অনুসরণ, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দ্রুত শক্তি সরবরাহ। আজকের আধুনিক যুগে গবেষণায়ও প্রমাণিত হয়েছে কিশমিশের এসব উপকারিতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *