ইসলামের ইতিহাসে সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবী এমন এক নাম, যিনি নিজের বুদ্ধিমত্তা, সাহসিকতা এবং ধর্মের প্রতি নিবেদিত মনোভাবের জন্য আজও স্মরণীয়।
কিন্তু একটি বিষয় অনেকের মনেই প্রশ্ন তোলে— ৩ হাজার আলেম হত্যার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও কীভাবে তিনি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠলেন?
১১৮৭ সালের হিত্তিনের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়ে সুলতান আল আকসা জয় করেছিলেন। সেই ঐতিহাসিক বিজয় মুসলিম বিশ্বে উল্লাসের জোয়ার এনে দিয়েছিল। কিন্তু সুলতানের মন তখনও উদ্বিগ্ন ছিল।
তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামের শত্রুরা মুসলিম সমাজে ছদ্মবেশে লুকিয়ে আছে এবং তাদের কার্যকলাপ মুসলিম বিশ্বকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে পারে।
শত্রু নির্মূলের এই আশঙ্কা থেকেই তিনি একটি গোপন গোয়েন্দা বিভাগ গড়ে তোলেন। এই বিভাগের সদস্যরা ছদ্মবেশী শত্রুদের শনাক্ত ও নির্মূল করার কাজে নিযুক্ত ছিলেন।
একবার ফিলিস্তিনের একজন ইমামের ছদ্মবেশী শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ঘটনা এই গোয়েন্দা বিভাগের সফলতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সুলতানের গোয়েন্দারা তাকে এবং আরও অনেককে তাদের আসল পরিচয়ের জন্য প্রকাশ্যে এনে শাস্তি দেন।
এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩ হাজার আলেমকে নির্মূল করা হয়, যারা প্রকৃতপক্ষে ইহুদিদের এজেন্ট ছিলেন এবং মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কাজ করছিলেন।
সুলতানের এই কঠোর পদক্ষেপ অনেকের কাছে বিতর্কিত মনে হলেও এটি মুসলিম সমাজকে বিভাজন থেকে রক্ষা করেছিল। তার বিচক্ষণতা ও প্রখর নেতৃত্বের কারণে মুসলিম বিশ্ব এক ভয়াবহ বিপদ থেকে বেঁচে যায়।
এই কারণেই, এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও, সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবী আজও মুসলিম বিশ্বের কাছে অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক। বর্তমান যুগেও তার মতো একজন মহান নেতার প্রয়োজনীয়তা বারবার অনুভূত হয়।
Leave a Reply