ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে তোলপাড়!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের নির্দেশে সই করেছেন। তার এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা।

সিদ্ধান্তের কারণ: চীনের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ
ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে ডব্লিউএইচও-এর কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছিল। তাদের দাবি, সংস্থাটি কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের পক্ষ নিয়েছিল এবং মহামারী মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছিল।

ট্রাম্প বলেন, “ডব্লিউএইচও চীনের ভুলগুলো ঢাকতে সহায়তা করেছে। আমরা প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার অনুদান দিই, অথচ সংস্থাটি চীনকে সমর্থন করে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।”

বিশেষ করে, কোভিড-১৯-এর তথ্য গোপন করার জন্য চীনকে দায়ী করে ট্রাম্প দাবি করেন, ডব্লিউএইচও সেই কাজে চীনকে সহায়তা করেছে।

ডব্লিউএইচও-তে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও এর প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও-এর অন্যতম প্রধান অর্থদাতা। প্রতিবছর দেশটি সংস্থাটিকে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ডব্লিউএইচও-এর আর্থিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. টম ফ্রিডেন মন্তব্য করেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ডব্লিউএইচও-এর সক্ষমতা কমিয়ে দেবে এবং ভবিষ্যতে মহামারী মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রস্তুতিকে হুমকির মুখে ফেলবে।”

ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক বার্তা
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির প্রতিফলন। এটি তার সমর্থকদের কাছে নির্বাচনের আগে শক্তিশালী বার্তা হিসেবে কাজ করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই অর্থ ডব্লিউএইচও-এর বদলে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে।

সম্ভাব্য সুবিধা ও ক্ষতিকর প্রভাব
সুবিধা:
১. অর্থনৈতিক সাশ্রয়: ডব্লিউএইচও-তে অনুদান বন্ধ করে সেই অর্থ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যয় করা যাবে।২. স্বাধীনতা: যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে স্বাধীনতা পাবে।

ক্ষতিকর প্রভাব:
১. আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব হারানো: যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাবে, যা বৈশ্বিক নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি করবে।২. বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উদ্যোগে বাধা: মহামারীসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে সমন্বয়হীনতা দেখা দিতে পারে।৩. ডব্লিউএইচও-এর কার্যক্রম দুর্বল হওয়া: আর্থিক সংকটের কারণে সংস্থাটি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে ব্যর্থ হতে পারে।

ডব্লিউএইচও-এর প্রতিক্রিয়া
ডব্লিউএইচও-এর মহাপরিচালক ট্রেডস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। তবে ডব্লিউএইচও বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ চালিয়ে যাবে।”

বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া
বিশ্বের অনেক দেশই এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক মহলে এটিকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *