সবসময় স্বাস্থ্যগুণে সেরা বলা হয় ফলমূলকে। ফলভেদে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে বিদ্যমান থাকে। এসব উপাদান শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ জন্য সুস্থ থাকতে নিয়মিত ফল খাওয়া জরুরি।
ফল উপকারী, এটা সবার জানা থাকলেও কেউ কেউ আবার দ্বিমত পোষণ করে থাকেন। একাংশের মতে, ফল খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এ জন্য অনেকেই ফলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন। আবার অন্যদেরও ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে―ফল খেলে আসলেই কি অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আশিস মিত্র। এবার তাহলে ফল খাওয়ার ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ফল খেলে কি অ্যাসিডিটি হয়: অনেকের মতে ফল খেলে অ্যাসিডিটি হয়। তবে এই ধারণার পেছনে বিজ্ঞানসম্মত কোনো যুক্তি নেই। এ জন্য পছন্দ অনুযায়ী যে কেউই ফল খেতে পারেন। তাতে বরং ওই ফলে থাকা পুষ্টি পাওয়া যাবে। তবে এটা সত্য যে, লেবুজাতীয় কিছু ফল রয়েছে, যা খাওয়ার পর সমস্যা হয়। গলা-বুক জ্বালা করে। যাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়, তাদের লেবু ও লেবুজাতীয় ফল এড়িয়ে চলাই ভালো।
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি) থাকলে বিপদ: সবার পেটেই হজমে সাহায্যকারী অ্যাসিড থাকে। কোনো কারণে যদি সেই অ্যাসিড খাদ্যনালী বেয়ে উপরের দিকে উঠে তাহলে গলা ও বুক জ্বালাপোড়া করে। এ সময় মুখও অনেকটা টক হয়ে যায়। আর এই সমস্যাকেই বলা হয় জিইআরডি।
জিইআরডি সমস্যায় আক্রান্তদের একাংশের ক্ষেত্রে ফল খেলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য এই রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফল খাওয়ার পরামর্শ ডা. আশিসের।
প্রতিদিন অবশ্যই ফল: হাতের নাগালের কাছে বা পরিচিত সব ফলেই ভিটামিন ও খনিজ বিদ্যমান। এমনকি উদ্ভিজ খাবারে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এ জন্য নিয়মিত ফল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন জটিল অসুখ দূরে থাকে। একইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতিও দূর হয়। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ফল খাওয়া উচিত। এই নিয়মে ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, কোলেস্টেরল ও প্রেশারের মতো সমস্যা দূরে থাকাসহ বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিসে সাবধান: ডায়াবেটিস থাকলে আম, কাঁঠাল ও লিচুর মতো ফল খেতে নিষেধ করা হয়। এসব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫০-এর বেশি থাকে। এ কারণে এসব ফল খাওয়ার পর রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে চাইলে আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি ও খরমুজের মতো ফল খেতে পারেন। এসব ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম থাকে।
জুস নয়, গোটা ফল: বাজারে পাওয়া বিভিন্ন ফলের জুসে অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভসহ অন্যান্য কেমিক্যাল থাকে। যা সাময়িক সময়ের জন্য মুখরোচক হলেও শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ জন্য ফলের জুস না খেয়ে বরং গোটা ফল খাওয়াই ভালো। তবে যারা একেবারেই ফুলের জুস খেতে পারেন না, তারা বাসা-বাড়িতে ফলের জুস বানিয়ে খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে জুসে বাড়তি চিনি যোগ না করাই ভালো।
Leave a Reply