ইউরিক অ্যাসিড হল একটি বর্জ্য পণ্য যা পিউরিনের ভাঙ্গন দ্বারা উৎপন্ন হয়, যা কিছু খাবার এবং মৃত কোষে পাওয়া যায়। সাধারণভাবে, ইউরিক অ্যাসিডের অধিকাংশ রক্তে দ্রবীভূত হয়ে থাকে, আর বাকি অংশ কিডনিতে চলে যায় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তবে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শরীরে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যা প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা জরুরি। এটি যদি দীর্ঘকাল ধরে উপেক্ষা করা হয়, তবে বাত ও কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এজন্য, বিশেষ করে প্রস্রাবের সময় কিছু লক্ষণ খেয়াল রাখা উচিত।
প্রস্রাবের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ:
১. কালচে প্রস্রাব:
যখন ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা বাদামী হতে পারে। সাধারণত, সুস্থ মানুষের প্রস্রাব হলুদ রঙের হয়, তবে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়লে এটি পরিবর্তিত হয়ে কালচে হতে পারে। তবে, এটি ডিহাইড্রেশন এবং কিডনি রোগের কারণেও হতে পারে।
২. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া:
ইউরিক অ্যাসিডের বাড়তি পরিমাণ শরীরে থাকলে, একজন ব্যক্তি স্বাভাবিকের তুলনায় কম প্রস্রাব করতে পারে। এটি কিডনির কার্যকারিতার সমস্যা নির্দেশ করে, যার ফলে ইউরিক অ্যাসিড সঠিকভাবে নির্গত হতে পারে না।
৩. ব্যথা বা জ্বালা অনুভব:
প্রস্রাব করার সময় যদি ব্যথা বা জ্বালা অনুভূত হয়, তবে এটি উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের একটি লক্ষণ হতে পারে। মূত্রনালীর সংক্রমণ বা কিডনিতে পাথরের কারণে এটি হতে পারে।
৪. ফেনাযুক্ত প্রস্রাব:
ফেনাযুক্ত প্রস্রাবও উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ হতে পারে। এটি কিডনির সঠিক কার্যকারিতা না থাকার ইঙ্গিত দেয়, যার ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন শরীরে জমে যায়।
৫. তীব্র গন্ধযুক্ত প্রস্রাব:
সাধারণত, একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রস্রাবের একটি স্বাভাবিক গন্ধ থাকে যা ফ্লাশ করার সঙ্গে চলে যায়। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়লে প্রস্রাবের গন্ধ তীব্র হতে পারে। এটি ডায়াবেটিসের একটি সাধারণ লক্ষণও হতে পারে।
এ সকল লক্ষণ যদি নিয়মিত দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে তা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, যা কিডনি ও বাতের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
Leave a Reply