ইউটিউব চ্যানেলে একটি বিতর্কিত বক্তব্য প্রচারের মাধ্যমে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে সাংবাদিক ও উপস্থাপক নবনীতা চৌধুরী। গত ২৪ জানুয়ারি নিজের ইউটিউব অনুষ্ঠানে “নবনীতার বয়ান” শিরোনামে “বিএনপি ছাড়া নির্বাচন?” নামক একটি এপিসোডে তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা গ্রহণ নিয়ে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ তোলেন।
এর প্রেক্ষিতে আজ (২৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম এক তীব্র প্রতিক্রিয়ামূলক স্ট্যাটাস দিয়ে নবনীতার বক্তব্যকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রেস সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, নবনীতা চৌধুরী ইউটিউবে দাবি করেছেন যে জেনারেল ওয়াকার দেশের দুই শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে অপসারণে ভূমিকা রেখেছেন। জেনারেল ওয়াকার শেখ হাসিনাকে হাজার হাজার মানুষের মিছিলের মুখে ভারত পাঠিয়েছিলেন এবং খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। তিনি আরও দাবি করেন, এরপর সেনাপ্রধান প্রফেসর ইউনূসকে ক্ষমতায় বসান।
প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম নবনীতার এই অভিযোগগুলোকে প্রশ্ন তোলেন, নবনীতা কি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবেন যে জেনারেল ওয়াকার শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লি পাঠিয়েছিলেন?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পেছনে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী গণআন্দোলনের মুখ্য ভূমিকার কথা এখানে উপেক্ষিত।
তিনি আরও প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রার বিষয়ে নবনীতার অভিযোগ কি তার পরিবার বা দলের সিদ্ধান্তকে অস্বীকার করে? সেনাপ্রধানের ভূমিকা প্রমাণ করতে নবনীতার কাছে কি যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে?
প্রেস সচিব আরও বলেন, নবনীতা চৌধুরীর সবচেয়ে জঘন্য অভিযোগ হলো যে জেনারেল ওয়াকার প্রফেসর ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। অথচ প্রধান উপদেষ্টা নিজে একাধিকবার বলেছেন যে তাঁকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সে সময় তিনি প্যারিসে একটি ছোট অপারেশনের জন্য চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেনাপ্রধান বা অন্য কোনো ব্যক্তি তাঁকে এই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। বরং ৫ আগস্ট সেনাপ্রধান রাজনৈতিক দল, ছাত্রনেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করেছিলেন, যা ছিল উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা।
প্রেস সচিবের মতে, নবনীতার এই অভিযোগগুলো ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ-বিষয়ক বর্ণনাকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়েছে। “শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যম এবং কিছু প্রভাবশালী বিশ্লেষক ৫ আগস্টের ঘটনাকে সামরিক অভ্যুত্থান হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সত্য এর সম্পূর্ণ বিপরীত।” নবনীতা চৌধুরী সেই বর্ণনারই প্রতিধ্বনি করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব আরও অভিযোগ করেন, নবনীতা চৌধুরী অতীতে শেখ হাসিনার শাসনের তোষামোদ করে ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানে একটি লাভজনক চাকরি পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “এখন তিনি ভারতীয় প্রভাবশালী স্বার্থের তোষামোদ করছেন।
Leave a Reply