বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনায় দলটির অনেক নেতাকর্মী দখলদারি ও চাঁদাবাজির মতো অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি এমন আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে পেল যে তারা ক্ষমতায় আসতে চলেছে? এবং ক্ষমতায় যাওয়ার আগে থেকেই কেন তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে?
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেত্রী ও আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক।” তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, দলের অনেক নেতাকর্মী এমনসব অপকর্মে যুক্ত হয়ে পড়েছে, যা দলের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করছে।
এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে দলীয়ভাবে রুমিন ফারহানার কাছে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একটি প্রতিবেদন চাওয়া হয়। তবে রুমিন এর জবাবদিহিতার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে মাত্র ৬৯ ঘণ্টায় একটি ১৬৮ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দলীয় নেতৃত্বের কাছে জমা দেন।
রুমিন আশা প্রকাশ করেছেন যে, তার এই রিপোর্টের ভিত্তিতে দলের ভেতরের যারা অপকর্ম করছে এবং দলের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নেতাকর্মীদের মেধা বা যোগ্যতার বদলে তোষামোদ এবং অর্থবিত্তকেই এখন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি অনেকের কাছে এখন তেলবাজি আর সম্পদ অর্জনের সহজ পথ হয়ে উঠেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবার গর্ব করে বলেছিলেন যে তার দলের নেতা-কর্মীরা শতকোটি টাকার মালিক এবং হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। এই ধরনের বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের মধ্যেই নয়, অন্যান্য দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যেও ভ্রান্ত বার্তা দিয়েছে। তারা ভাবতে শুরু করেছে যে, ক্ষমতায় এলে এ ধরনের কাজ বৈধ হয়ে যায়।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, “বিএনপি এখনো ক্ষমতায় আসেনি। দলের নেতাকর্মীদের মাটির দিকে তাকিয়ে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। জনগণের প্রতি জবাবদিহি এবং দলের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।” তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দখলদারি ও চাঁদাবাজির প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রুমিন ফারহানা এর পাশাপাশি সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সরকার কেন আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে না, সেটি স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। ক্ষমতাসীন দলগুলো যদি নিজেদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ না করে, তবে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা আরও অবনতির দিকে যাবে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে রুমিন ফারহানা দলীয় নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনার পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।
Leave a Reply