ব্রেকিং নিউজ: শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেছে ইন্টারপোল জানা গেল খবরের সত্যতা!

সম্প্রতি ইন্টারনেট মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের বরাতে দাবি করা হয়েছে, ইন্টারপোল শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও অ্যাকাউন্ট থেকে এমন দাবিতে পোস্ট করা হয়েছে।

তবে তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ভারতীয় ওই গণমাধ্যম ‘শেখ হাসিনাকে ইন্টারপোল গ্রেপ্তার করেছে’ এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই সামাজিক মাধ্যমে এমন দাবি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারপোল কর্তৃক কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার নেই।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, ইন্টারনেটে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের বরাতে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে। তবে ভারতীয় ওই গণমাধ্যমটির ইংরেজি ও বাংলা সংস্করণের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ও অ্যাডভান্স সার্চ করেও এমন দাবিতে কোনো তথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সবশেষ রোববার (২৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমটির বাংলা সংস্করণে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে প্রতিবেদনটি শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে নয়, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হবে না’ শীর্ষক মন্তব্য নিয়ে।

অন্যদিকে ভারতীয় ওই গণমাধ্যমটির ইংরেজি সংস্করণেও শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সবশেষ গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমটিতে শেখ হাসিনার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে তদন্তকারী কমিশনের বরাতে শেখ হাসিনার শাসনামলে গোপন কারাগারে শিশু ও তাদের মায়েদের গোপন আটক কেন্দ্রে বন্দি রাখার বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়। তবে এ প্রতিবেদনেও শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়া অনুসন্ধানে ইন্টারনেট আর্কাইভ যাচাই করেও হিন্দুস্তান টাইমসে এমন দাবিতে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও শেখ হাসিনাকে ইন্টারপোলের গ্রেপ্তারের দাবির বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মূলধারার গণমাধ্যমসহ নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সুতরাং, হিন্দুস্তান টাইমসকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে ইন্টারনেটে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

উল্লেখ্য, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদানে একটি আন্তর্জাতিক নোটিশ ব্যবস্থা পরিচালনা করে ইন্টারপোল। এতে রেড নোটিশ নামে একটি বিশেষ ধরনের সতর্কবার্তা জারি করা হয়। এটি মূলত এক ধরনের আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, যার মাধ্যমে একটি দেশ অন্য দেশগুলোকে কোনো অপরাধীকে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনতে তাকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করতে সাহায্য চায়। এ ক্ষেত্রে কোনো অপরাধীকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব আবেদনকারী দেশেরই।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী ব্যবস্থা ইন্টারপোলের কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতাও নেই। এর পরিবর্তে সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী পলাতকদের শনাক্ত করতে সহায়তা করার সময় রেড নোটিশ, ফরেনসিক ও বিশ্লেষণের মতো তদন্তমূলক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করে। এ ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলো নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী রেড নোটিশের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এ সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *