সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে কর্মবিরতির মাধ্যমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন (বাবিশিসফে)। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পহেলা জুলাই থেকে এ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষকরা। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষকদের কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা শিক্ষক তারা সরকারি শিক্ষক হিসেবে গণ্য হন না। তাদের নিজস্ব কাঠামো আছে। পেনশন স্কিম প্রত্যয় প্রত্যাহারের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মসূচি দিয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। আর পেনশন স্কিম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের না, এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিষয়। ২০২৫ সাল থেকে সরকারি সকল কর্মকর্তা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন। শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়ে আবারও আমরা আলোচনা করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু শিক্ষক নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিয়ে আমি এখন কিছুই বলতে চাচ্ছি না। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে সোমবার (১ জুলাই) থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন (বাবিশিসফে)। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষকরা।
এদিকে সিলেট বোর্ড ছাড়া দেশের অন্য সব বোর্ডে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ রোববার (৩০ জুন)। বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সিলেট বিভাগের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৯ জুলাই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এবার সিলেট বিভাগে এইচএসসি ৯ জুলাই থেকে শুরু হবে। তবে দুর্যোগ সময়কে মাথায় রেখে আগামী বছরের পরীক্ষা আরও সামনের দিকে যাবে। শুষ্ক মৌসুমে আমরা পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করবো।
আগামী বছর এপ্রিলে পরীক্ষা নেয়ার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, সময়ের বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। রাজধানীর পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা গোটা দেশের পরীক্ষা চালাতে পারি না। পরীক্ষা কীভাবে আরও বিকেন্দ্রীকরণ করা যায়, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।
এইচএসসি পরীক্ষার প্রথমদিন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ ৯ লাখ ২৩ হাজার পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত ছিলেন ৯ হাজার ৯৭০ জন। আর বহিষ্কার হয়েছেন ২০ জন। এছাড়া বিদেশে ৮টি কেন্দ্রে ২৮১ জনের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো তথ্য নেই। তবে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর মতো কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।
এছাড়াও ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কীভাবে কম সময়ের মধ্যে নেয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছি। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নেয়ার টার্গেট রয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
Leave a Reply