উপকূলের আরও কাছে অতি বিপজ্জনক ‘বেরিল’, সঙ্গে নিয়ে আসছে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা!

পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন ‘বেরিল’ অতি বিপজ্জনক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শক্তি সঞ্চয় করে এটি এখন ক্যারিবীয় দেশগুলোর উপকূলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরের দিকে এটি এই অঞ্চলের দেশগুলোতে আঘাত হানতে পারে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা দেখা দিতে পারে। খবর সিএনএন ও গার্ডিয়ানের।

কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির হারিকেন বিষয়ক গবেষক ফিলিপ ক্লটজবাচের বলেন, গতকাল রোববার সকালে বেরিল ক্যাটাগরি থ্রি-তে উন্নীত হয়েছিল। এখন এটি আরও শক্তিশালী হয়ে অতি বিপজ্জনক ক্যাটাগরি ফোর-এ রূপ নিয়েছে।

হারিকেন ও ঝড়-বৃষ্টি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল লোরি বলেছেন, এবারের মৌসুমে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে যাওয়া হারিকেনের মধ্যে বেরিল অত্যন্ত বিপজ্জনক ও বিরল হারিকেন। আঘাত হানার আগেই এটি আগের অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, গ্রেনাডা এবং সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনে হারিকেন সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বার্বাডোসের আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক সাবু বেস্ট বলেছেন, সোমবার সকালে বেরিলের কেন্দ্রভাগ বার্বাডোসের দক্ষিণে প্রায় ১১২ কিমি বেগে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বেরিল বার্বাডোসের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব থেকে প্রায় ৫৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর বাতাসের সর্বোচ্চ বেগ ২১৫ কিমি এবং ৩৩ মাইল বেগে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

সংস্থাটি বলছে, এই হারিকেনের কারণে উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে অত্যন্ত গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ডমিনিকা, মার্টিনিক, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডাইনস ও গ্রেনাডার নিয়ে গঠিত উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ। প্রাণঘাতী ঝোড়ো বাতাস এবং জলোচ্ছ্বাস নিয়ে এটি উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

হারিকেনও এক ধরনের সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর, মধ্য ও পূর্ব-উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর, ক্যারিবীয় সাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে হারিকেন বলা হয়। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কিউবা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে এই হারিকেন আঘাত হানে। এবারের মৌসুমে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে যাওয়া প্রথম হারিকেন হলো বেরিল।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার খবরে মানুষজন বাড়িতে খাবার মজুত করতে শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে ফিলিং স্টেশনে জ্বালানি তেলের জন্য মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। অন্যদিকে, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী হারিকেন আঘাত হানার সময় বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও প্রতিবেশীদের খবর নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে হারিকেন মৌসুমের শুরুতে এটি দ্বিতীয় শক্তিশালী ঝড় হতে যাচ্ছে। এই অঞ্চলে হারিকেন মৌসুম সাধারণত ১ জুনে শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলে। এর আগে প্রথম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আলবার্টোর আঘাতে চারজনের মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *