শরীরের এই লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে!

হার্ট অ্যাটাক আসার আগে শরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দেয়, যা সঠিক সময়ে চেনা গেলে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। অনেক সময় এই লক্ষণগুলো অবহেলা করা হয়, কিন্তু সচেতন থাকলে জীবন রক্ষা করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কিছু প্রাথমিক লক্ষণ থাকলে তা হার্ট অ্যাটাকের পূর্ববর্তী সংকেত হতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এসব লক্ষণ সম্পর্কে:

১. বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি:হৃদরোগের অন্যতম সাধারণ লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি। এটি চাপ, জ্বালাপোড়া বা সংকোচনের মতো অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় এটি দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে।

২. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা:স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া, এমনকি বিশ্রামের পরও স্বাভাবিক অনুভব না করা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এ লক্ষণটি বেশি দেখা যায়।

৩. শ্বাসকষ্ট:ব্যায়াম ছাড়াই শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুক ভরে শ্বাস নিতে না পারা—এটি শুধুমাত্র ফুসফুসের সমস্যা নয়, বরং হার্ট অ্যাটাকেরও ইঙ্গিত হতে পারে।

৪. কাঁধ, বাহু, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা:বিশেষত বাম হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঘাড় বা চোয়ালে চাপ অনুভূতি হতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়।

৫. মাথা ঘোরা ও বমিভাব:সামান্য পরিশ্রমেও মাথা ঝিমঝিম করা, ভারসাম্য হারানোর অনুভূতি। বুক ব্যথার সাথে বমিভাব থাকলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে, তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৬. ঠান্ডা ঘাম:বিনা কারণে ঘাম হওয়া বা শরীর ঠান্ডা অনুভব করা। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণটি বেশি দেখা যায় এবং এটি হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস হতে পারে।

৭. অনিয়মিত হার্টবিট:হৃদস্পন্দন দ্রুত বা ধীর হয়ে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, কখনো কখনো শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার অনুভূতি—এগুলোও হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে।

৮. পেটের সমস্যা ও হজমের অসুবিধা:পেটে ব্যথা, গ্যাস, বুক জ্বালাপোড়া বা খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়া। অনেকেই একে সাধারণ অ্যাসিডিটি বা পেটের সমস্যা মনে করে ভুল করেন, তবে এটি হার্ট অ্যাটাকের সংকেত হতে পারে।

কখন সতর্ক হবেন?

যদি একাধিক উপসর্গ একসাথে দেখা দেয়।

ব্যথা বা অস্বস্তি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়।

বিশ্রাম বা ওষুধ খাওয়ার পরও স্বস্তি না পাওয়া যায়।

প্রতিরোধের উপায়:

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন (কম চর্বিযুক্ত ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খান)।নিয়মিত হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন।

ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন।

স্ট্রেস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। সচেতনতা ও প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক সময় জীবন বাঁচানো সম্ভব। তাই, সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।

Google News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *