ক্যান্সারে আক্রান্ত শেখ হাসিনা! যা জানা গেলো!

প্রাণঘাতী ক্যান্সারে আক্রান্ত ক্ষমাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অবস্থায় তার কোনো রাজনৈতিক আশা আকাঙ্ক্ষা নেই। যতদিন বেঁচে থাকবেন রাজনীতি ছেড়ে পরকালের পাথেয় জোগাড় করতে চান তিনি। শেখ হাসিনার স্বাক্ষর করা এমনই একটি বিবৃতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঘুরছে। এবার সেই বিবৃতিটির সত্যতা যাচাই করেছে ফ্যাক্ট চেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার।

গত ২৮ জানুয়ারি নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি। ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ। ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি। ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল। এছাড়া, বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে বিজ্ঞপ্তিটি দলটির সংশ্লিষ্ট কোনো নেতা-কর্মীর পক্ষ থেকে তা উল্লেখ ছিল না।

এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি বিবৃতির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রিয় দেশবাসী! আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে, আমি শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ। প্রাণঘাতী ক্যান্সার আমাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমার কোন প্রকার ক্ষমতা বা রাজনৈতিক আশা আকাঙ্ক্ষা নাই। আমি আজ স্পষ্ট জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ হ্যাক করে বিএনপি জামায়াতের লোকেরা বিভিন্ন উস্কানিমূলক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের শান্তিপ্রিয় নেতাকর্মীদেরকে হরতাল, অবরোধসহ জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচির দিকে চালিত করছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণার্হ কাজ। আমি বারবার বলেছি আমি এখন শান্তি চাই, পরকালের পাথেয় জোগাড় করতে চাই। আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমি এখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং আমি এসব সন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচির সাথে আমার বা আমার দলের দূরতম সম্পর্কও নাই। এমতাবস্থায় দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই এসকল দুর্বৃত্ত আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন এবং তাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিন। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!! বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত এই বিবৃতিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনা এমন কোনো বিবৃতি দেননি।

অনুসন্ধানের শুরুতে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে আলোচিত বিবৃতি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত বিবৃতির ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। বিবৃতির ছবিটিতে ভারতের জাতীয় প্রতীক, হিন্দি ও বাংলার সংমিশ্রণ, শেখ হাসিনার নাম হিন্দি ও ইংরিজেতে থাকার মতো অসঙ্গতি দেখা যায়। শেখ হাসিনা কোনো বিবৃতি দিলে স্বাভাবিকভাবে তাতে এসব তথ্য থাকার কথা নয়।

এছাড়া, বিবৃতিটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ হ্যাক হয়েছে দাবি করা হলেও এমন কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও আলোচিত বিবৃতি বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত এই বিবৃতি ভুয়া ও বানোয়াট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *