এই বছরেই নির্বাচন, সম্ভাব্য সময় জানালেন : প্রধান উপদেষ্টা

“নির্বাচন হলে নতুন যে সরকার দায়িত্ব নেবে, তারা তখন কাজ করার নিরাপদ একটি ভিত্তি পাবে,” বলেন তিনি। এ বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

নির্বাচন একটি জাতির গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠার জন্য ‘অপরিহার্য’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, সবচেয়ে দ্রুতও যদি নির্বাচনের আয়োজন করা হয়, ‘এ বছরের শেষ দিকে’ সেটা হতে পারে।

জাপানের সরকারি টেলিভিশন এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে বুধবার দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচনের সম্ভাব্য এই রূপরেখা তুলে ধরেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।

গত বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে একটি ধারণা দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেছিলেন, ভোট কবে হবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কতটা সংস্কার করে নির্বাচনেযাওয়া হবে, তার ওপর। মোটাদাগে ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে হতে পারে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন।

ইউনূসের ওই ঘোষণায় সন্তুষ্ট না হয়ে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ চেয়ে আসছে বিএনপি; তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলোর প্রতিবেদন আসার পর সংস্কার প্রক্রিয়া এবং ভোটের সময় ঘোষণার বিষয় আসবে।

এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, “নির্বাচন হলে নতুন যে সরকার দায়িত্ব নেবে, তারা তখন কাজ করার নিরাপদ একটি ভিত্তি পাবে।”

ছাত্র-জনতার তুমুল গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটে।

এর তিন দিনের মাথায় ৮ অগাস্ট দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার, যাতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের মধ্য থেকেও দুজন দায়িত্ব পান।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশের যে হাল হয়েছিল, গত অগাস্টে তাদের পতনের পর সেখান থেকে অনেকটা ‘উৎরানোর’ কথা সাক্ষাৎকারে বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তার ভাষায়, দেশ সঠিক পথেই আছে এবং আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

“যে সময়টাতে আমরা এসেছিলাম (৫ অগাস্ট), সেই তুলনায় আমি মনে করি অনেকদূর এগিয়েছি আমরা। কারণ সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি ও বিচার ব্যবস্থা সবকিছু ছিল বিধ্বস্ত।”

সাক্ষাতকারে দেশের তরুণদের সামনের কাতারে রাখার কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা, যারা আওয়ামী লীগের পতনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল।

তিনি বলেন, “তরুণ-যুবকরা যা করতে চায়…তাদের সৃজনশীলতার ক্ষমতা দেখুন, সেগুলো বিশ্বের অন্যদের শেয়ার করুন। লক্ষ্য নিয়ে কীভাবে আমরা সামনে এগিয়ে যাই, দেখুন।”

বাংলাদেশের সবথেকে বৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। জাপানের প্রযুক্তি আর বিনিয়োগ বাংলাদেশের তরুণ-যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *