প্রায় সবার ত্বকে ব্রণের উপস্থিতি দেখা যায়। এটা ত্বকের একটি অস্বস্তিকর সমস্যা। অনেকের ব্রণ হয় এবং তা পরিচর্যা করলে সেরে যায়। আবার কিছু ব্রণ আছে যা সহজে সারতেই চায় না, সারলেও বারবার ফিরে আসে। এতে ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ব্যাকটেরিয়া এবং হরমোনের কারণে ব্রণ হয়। কোন ধরনের ব্রণ হয়েছে সেটা জানা খুব জরুরি। মার্কিন লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ফোবস থেকে জানা যায় কিছু লক্ষণ যা থেকে বুঝবেন আপনার ব্রণের কারণ।
হরমোনের কারণে ব্রণ: বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের শরীরে হরমোনের ওঠা-নামার কারণে ব্রণ হয়। এই ব্রণ ব্যথাযুক্ত, গভীর, দানাদার হয়। আর মুখমণ্ডলের নিচে ও গলায় হয়ে থাকে। উঠতি তরুণ ও নারীদের মাঝে সাধারণত দেখা যায়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থা বা রজঃবন্ধ হলে। এই সময়ে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে ত্বকের তেল নিঃসরণ বাড়ে। যা লোমকূপ বন্ধ করে ব্যাকটেরিয়া গজানোর পরিবেশ তৈরি করে দেয়।
এছাড়াও সিস্ট ও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার অন্যান্য লক্ষণগুলির সঙ্গে ব্রনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অনিয়মিত মাসিক চক্র, ওজন বৃদ্ধি, হিরসুটিজম ইত্যাদির কারণেও ব্রণ দেখা যায়।
প্রতিকার
সাধারণত দুই পর্যায়ে হরমোনাল ব্রণের চিকিৎসা করা হয়। প্রথমত লোমকূপ পরিষ্কার করে আর দ্বিতীয় ধাপ হল ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে হরমোনের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ।
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, বেঞ্জোয়েল পারোক্সাইড এবং রেটিনয়েডস সমৃদ্ধ প্রসাধনী দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পাশাপাশি চিকিৎসকের মতানুসারে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
এছাড়া মানসিক চাপের হরমোন কর্টিরসল বৃদ্ধি কারণেও ব্রণ হয়। এই হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ কমাতে দুগ্ধজাত খাবার এড়ানো উপকারী।
ব্যাক্টেরিয়ার কারণে ব্রণ: অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ব্রণ দেখতে ফুসকুড়ির মতো লাগে। আর মুখ বা শরীরের যে কোনো জায়গায় দেখা দিতে পারে বলেন চিকিৎসকরা। আর বেশিরভাগ সময় যেখানে তেল নিঃসরণ বেশি হয় সেখানেই বেশি ওঠে; যেমন- কপাল, গাল বা নাক।এই ব্রণ চক্রাকারে ফিরে আসে না। লালচে ও বেশিরভাগ সময় ব্যথাযুক্ত হয়। এই ব্রণ নরম হয়, তাই চাপ দিলে ভেতরের পানি বের হয়।
প্রতিকার
ব্যাকটেরিয়া কারণে ত্বকে কী পরিমাণ ব্রণ উঠেছে সেই হিসেবে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সাধারণত বেঞ্জোয়েল পারোক্সাইড সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ ব্যবহারে উপকার মেলে। সঙ্গে ব্যাক্টেরিয়া রোধী উপাদান যেমন ‘ক্লিন্ডামাইসিন’ সমৃদ্ধ লোশন মেখে ব্যাক্টেরিয়া জন্মানোর পরিমাণ কমানো যায়।
দুগ্ধজাত খাবার প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই এসব এড়ালে ব্রণ থেকে মুক্তি মেলে দ্রুত।
তিন মাসের মধ্যে ব্রণের সমস্যা ঠিক না হলে ত্বক-বিশেষজ্ঞ বা চর্মরোগের দ্বারস্থ হতে হবে।প্রতিনিয়ত ব্রণ হতে থাকলে সেগুলো খুঁটলে ত্বকে স্থায়ী দাগ হয়ে যায়। তাই চিকিৎসকার প্রয়োজন রয়েছে। তখন সাধারণ ত্বক পরিচর্যায় সুফল পাওয়া যায় না।
Leave a Reply