free tracking

মাত্র ৭টি কৌশল মানলেন টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব !

দীর্ঘদিন ধরে টাকা জমানো বা সঞ্চয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই সেটা পারেন না। বর্তমান সময়ে এই সমস্যা সবার জন্য স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি মাসেই খাবারের খরচ কেন্দ্র করে অনেকতা অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। তবে কিছু কৌশল মানলেই কিন্তু অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এমন ৭টি কৌশল তুলে ধরা হয়েছে। যেগুলো হলো:

সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে খাবারের অপচয় অনেক কমানো সম্ভব। দ্রুত নষ্ট হওয়া খাবার ফ্রিজে রাখুন, তবে কলা ও টমেটোর মতো কিছু ফল ঘরের তাপমাত্রায় ভালো থাকে। প্লাস্টিক প্যাকেট থেকে খাবার বের করে সংরক্ষণ করুন, যাতে তা ঘামতে না পারে।

আপেল, কলা, অ্যাভোকাডো, টমেটো ও নাশপাতির মতো উচ্চ ইথিলিন নিঃসরণকারী ফল-সবজি আলাদা রাখুন, যাতে অন্য খাবার দ্রুত নষ্ট না হয়। মসলা ও শুকনো খাবার এয়ারটাইট কনটেইনারে রাখুন, যাতে পোকামাকড় ও আর্দ্রতা থেকে রক্ষা পায়। মসলাগুলো ঠান্ডা ও অন্ধকার স্থানে রাখুন এবং সম্ভব হলে পুরো মসলা কিনে ব্যবহার করার আগে গুঁড়ো করুন।

অবশিষ্ট খাবার ব্যবহার

বেঁচে যাওয়া খাবার ঠিকভাবে ব্যবহার করলে খাবার অপচয় অনেক কমে যায়। ইচ্ছে করেই একটু বেশি রান্না করুন, যাতে পরদিনের জন্য কিছু মজুদ থাকে। আলু বেঁচে গেলে সেটি দিয়ে টুনা ও ক্যাপারের কেক তৈরি করে উপরে পোচড ডিম ও পেস্টো যোগ করুন। ফ্রিজে কিছু না থাকলেও ছোলা, টমেটো ও নারকেল দুধ দিয়ে সুস্বাদু খাবার বানানো সম্ভব।

পেঁয়াজ ও স্টকের সঙ্গে মিশিয়ে যে কোনো সবজি দিয়ে সুস্বাদু স্যুপ তৈরি করুন।অবশিষ্ট মাংস বা সবজি টমেটো, মসলা ও শস্য যুক্ত করে এক পাত্রে রান্না করুন।

যেসব খাবার সহজে নষ্ট হয় না এমন খাবার সহজেই সংরক্ষণ করা যায়। শুকনো শস্য, মসলা, টিনজাত খাদ্য ইত্যাদি বেশি পরিমাণে কিনলে টাকা সাশ্রয় হয়।সুপারশপের পরিবর্তে পাইকারি দোকান থেকে কেনাকাটা করুন, যাতে কিছুটা কম দামে কেনা যায়। ভালো মানের এয়ারটাইট কনটেইনার ব্যবহার করুন, যাতে খাবার দীর্ঘদিন ভালো থাকে। সংরক্ষণের জায়গা নিশ্চিত করে তবেই বড় পরিমাণে কিনুন।

ঘরে খাবারের মজুদ
প্রথমেই জানতে হবে আপনার ঘরে কী কী খাবার মজুদ আছে। রান্নাঘরের পণ্যগুলোর তালিকা তৈরি করুন এবং তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখগুলো নোট করুন। ‘ফার্স্ট ইন এবং ফার্স্ট আউট’ নিয়ম মেনে খাবার সাজান—অর্থাৎ, যেগুলোর মেয়াদ আগে শেষ হবে সেগুলো সামনে রাখুন। একটি ভালো মজুদ তালিকা রাখার অনেক সুবিধা আছে, যেমন অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা এড়ানো যায় এবং মজুত থাকা উপকরণ দিয়ে নতুন খাবারের আইডিয়া পাওয়া যায়।

মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ

‘ব্যবহারের শেষ তারিখ’ এবং ‘ব্যবহারের সেরা সময়(best before date)’ এর পার্থক্য বুঝতে পারলে অনেক টাকা বাঁচানো সম্ভব। অনেক সময় অকারণে খাবার ফেলে দেয়া হয় কারণ মানুষ এগুলোকে এক মনে করে। ব্যবহারের শেষ তারিখ স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য দেয়া হয়, যা মেনে চলা উচিত। তবে সেরা মানের তারিখ শুধু খাবারের গুণমান নির্দেশ করে, অর্থাৎ তারিখ পার হওয়ার পরও তা নিরাপদ থাকতে পারে।

মৌসুমি ফল ও সবজি সংরক্ষণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আচার বানানো। এতে টাকা সাশ্রয় হয় ও সারা বছর নির্দিষ্ট সবজি-ফল খাওয়া যায়। সহজ পদ্ধতিতে আচার তৈরির জন্য সমান পরিমাণ আপেল সিডার ভিনেগার, চিনি ও পানি নিন। এটি ফুটিয়ে চিনির দানা গলে গেলে ঠান্ডা করুন। সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত জারে কাঁচা সবজি রাখুন ও উপরে তৈরি করা তরল ঢেলে দিন, যাতে সবজি সম্পূর্ণ ডুবে যায়। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা আচার তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

ফারমেন্ট করুন

ফারমেন্টেশন হলো খাবার সংরক্ষণের আরেকটি কার্যকর পদ্ধতি, যা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়। বাঁধাকপি, শসা, গাজরের মতো সবজি দিয়ে শুরু করতে পারেন। এ জন্য প্রথমে সবজিগুলো ছোট ছোট টুকরো করে ২-৩% লবণ মিশিয়ে হাতে ভালোভাবে মাখুন, যাতে সবজি থেকে রস বের হয়ে আসে। পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত জারে রেখে ভালোভাবে চেপে দিন এবং উপরে কিছুটা ফাঁকা জায়গা রাখুন।কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করুন, মাঝে মাঝে স্বাদ পরীক্ষা করুন। পছন্দসই স্বাদ হলে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন।

সঠিক পরিকল্পনা ও সংরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করলে খাবারের অপচয় কমানো সম্ভব এবং মাস শেষে বাজেটেও স্বস্তি আসবে। আমাদের দৈনন্দিন ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তন করে আমরা টাকা সাশ্রয় করতে পারি ও টেকসই জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *