free tracking

২০০ একর জমি দখল করে মায়ের নামে কলেজ নির্মাণ করেছেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী!!

দেখতে পরিপাটি ও নিপাট ভদ্রলোক। কিন্তু লুটপাট ও দুর্নীতিতে কোন অংশে কম যাননি পতিত স্বৈরাচারী হাসিনার কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক।টাঙ্গাইলের মানুষকে ভুলিয়ে ভালিয়ে হয়েছেন এমপি, মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বড় নেতা।

ক্ষমতায় থাকাকালীন এলাকার মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন না ঘটালেও, গ্রামে ৩০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি। আর রাজধানীর গুলশান ও বনানীতে করেছেন কয়েকটি ফ্ল্যাট। কথিত আছে, আমেরিকায় ১২টি পেট্রোল পাম্পে রয়েছে তার শেয়ারও।

ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ধনবাড়ির মুসুদ্দি গ্রামের বৈরান নদীর প্রায় ২০০ একর জমি দখল করে মায়ের নামে মুসুদ্দি রেজিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে টাঙ্গাইলে দুটি হত্যাসহ তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড শেষে সম্প্রতি ডক্টর আব্দুর রাজ্জাককে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সরকার পতনের প্রায় ছয় মাস হয়ে গেলেও আশ্চর্যের বিষয় হলো বাংলাদেশ মেডিকেল স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিএমএসআরআই এর চেয়ারম্যান পদে এখনো বহাল রয়েছেন সাবেক এই মন্ত্রী।

শুধু তাই নয় ওই পদটি পেয়ে, গত সাত বছরে তিনি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অবৈধ নিয়োগ ও পদোন্নতি বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এলাকাবাসীও তার এসব অপকর্মে ছিল অতিষ্ঠ।

এক ভোক্তভোগী জানান, এমপি সাহেব এই জমিগুলো নিয়া, টাকা পয়সা কিছু কিছু দিছে, কিছু কিছু বাকি রাখছে।

আরেক ভোক্তভোগী বলেন, তারপরে আবার এই যে জয়না, ময়না এদের দুই ভাই জমি নিছে। এমপি সাব এই জমিগুলা নিয়া তারপরে মনে করেন, যে কিছু কিছু টাকা দিছে। সাব নায়ার সাহেবের দিয়া মাফ দেওয়াইছে। নায়েব সাবের মধ্যে খোঁটা কাইটা গেট গেছে। তখন তো আর বালুর মধ্যে কিছু করা হয় নাই। ওই যে ইয়া সরকারি খাড় জমিন থেকে বালু কাইটা।

জবাবে বলেন, ক্যা, কিছু নাই ক্যা কিছু, ১৬ বিঘার মধ্যে এই যে, কেউ কেউ গরিব মানুষ আছে, দিবি না ক্যা, খোল না। মাইরা হালামু, পুলিশ দিমু, জেলে পাঠামু, থানায় যা। আমগোরে কেস করে, আমগোরে হ এখন সব পলাইছে না। টাকা পয়সা কেউ নেই নাই। টাকা পয়সা কেউ না। এডি ক্ষমতার বাইরে, ওর ভাই চেয়ারম্যান, তার ভাই একটা উপজেলায় হিরা মিয়া চেয়ারম্যান, তারা থানায় থাকে, বোনের জামাই আছে, টাঙ্গাইল ডিসি আছে। সবকিছু কইরা ওই উমরা বাজারের মধ্যে স্কুল ভাই সবকিছু তারাই আছে। দুনিয়া সব খোদায় নিয়া গেছে গা। কেবল শুরু, কেবল পাঁচ ছয় মাস যায়, এহন কি! ভালো, আরো থাক এক বছর।

২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টাঙ্গাইল এক আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ১২ সাল পর্যন্ত খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, ১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী, আর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি অর্থাৎ সভাপতি মন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধনবাড়ির ভাইঘাট পালবাড়ির মতি ড্রাইভারের ছেলে রাব্বির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। তাছাড়া স্ক্যামিং, পর্নোগ্রাফি ব্যবসায় জড়িত এই রাব্বির বিরুদ্ধে সিআইডির করা মামলা থেকে তার নামও কেটে দেন সাবেক এই মন্ত্রী।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, “তার মধ্যে যে এত দুর্নীতি, দুঃশাসন এবং সন্ত্রাসীদের গডফাদারদের, তিনি লালনকর্তা ছিলেন। এটা আমরা আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম এবং টাঙ্গাইলের প্রত্যেকটা সেক্টর আপনার এলজিডি, রোডস এন্ড হাই, পিডব্লিউডি এবং পরিবহন সেক্টর এবং টাঙ্গাইলের এক প্রদীপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সকল কিছুর ঠিকাদারী তিনি নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তার এক ভাগ্না ছিল, তারেকের মাধ্যমে এবং তিনি হাজার হাজার কোটি টাকা তিনি টাঙ্গাইল থেকে লোপাট করেছেন।”

তিনি আরো বলেন, “যেকোনো কাজে তাকে পার্সেন্টের দিতে হতো, ১০% করে দিতে হতো। এটা আমরা এখন খবর পাচ্ছি। আর অবৈধভাবে মধুপুরে ধনবাড়ি তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন তো, অনেক শত শত একর জমি, বন বিভাগের জমি, তারা দখল করেছে। আসলে সে একটা ভালো মানুষের মুখোশের আড়ালে, সে একটা সন্ত্রাসীদের গডফাদার ছিল।”

শুধু এখানেই শেষ নয়, সাবেক এ মন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তার স্বজনরাই পদোন্নতি, টেন্ডার নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকা মধুপুর ধনবাড়িতে জমি দখল, শালিশ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, থানার দালালি এসব চলেছে মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদদে।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=MrH1hGeI0us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *