নিজস্ব প্রতিবেদক: ফুটবলে কিছু রাত থাকে, যা ইতিহাস হয়ে যায়। চেজ স্টেডিয়ামের এই রাতটাও তেমনই এক রাত, যেখানে লিওনেল মেসির পায়ের ছোঁয়ায় ইন্টার মায়ামি উড়ল আরও উঁচুতে। স্পোর্টিং কানসাস সিটিকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের শেষ ষোলো নিশ্চিত করল ডেভিড বেকহামের দল। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তারা এখন শিরোপার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।
প্রথম লেগে তুষার ঢাকা কানসাস সিটিতে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছিলেন মেসি। এবার নিজের পরিচিত ফ্লোরিডার উষ্ণ আবহাওয়ায় ম্যাচের ১৯তম মিনিটেই জাদুর স্পর্শ দেন তিনি। সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজের নরম চিপ পাস পেয়ে মুহূর্তের সিদ্ধান্তে নিচু শটে বল ঠেলে দেন জালের কোণে। ডিফেন্ডাররা যেন মুহূর্তেই হারিয়ে ফেলেন তাকে, আর গোলরক্ষক শুধুই দেখেন বলের নিখুঁত গতিপথ!
মেসির গোলের পরেও মায়ামির ক্ষুধা মেটেনি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ এক থ্রু বল বাড়ান তিনি। সেই পাস ধরে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ছুটে যান জর্দি আলবা, নিচু ক্রস পাঠান বক্সে। ঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদেও আলেন্দে, স্পর্শ মাত্রেই বল জড়িয়ে যায় জালে। মায়ামি তখন উল্লাসে মত্ত, আর কানসাস সিটি যেন বুঝতেই পারছিল না কী ঘটছে!
তবে বিপর্যয় তখনও শেষ হয়নি অতিথিদের জন্য। বিরতির আগে আরও একবার শাস্তি দেয় মায়ামি। কানসাস সিটির ডিফেন্ডার জ্যাকব ডেভিস হতভাগ্য হয়ে গেলেন এক ভুলে—তার ভুলে মারাত্মক এক মিস-ক্লিয়ারেন্স চলে যায় সুয়ারেজের সামনে, যিনি এক মুহূর্তও দেরি না করে দুর্দান্ত ভলিতে বল পাঠান জালে। ম্যাচ তখন কার্যত শেষ!
দ্বিতীয়ার্ধে কানসাস সিটি মরিয়া হয়ে খেলতে চেয়েছিল, কিন্তু সেই মরিয়া চেষ্টায় এল সান্ত্বনার মাত্র এক গোল। ৬৩তম মিনিটে মেমো রদ্রিগেজের দূরপাল্লার শট মায়ামির ডিফেন্ডার ম্যাক্সিমিলিয়ানো ফ্যালকনের পিঠে লেগে দিক পরিবর্তন করে জালে ঢুকে যায়।
কিন্তু এতে ম্যাচের গল্প বদলায়নি। ইন্টার মায়ামি তাদের অপ্রতিরোধ্য যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। এবার তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ জ্যামাইকান ক্লাব ক্যাভালিয়ার, যারা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন। ফ্লোরিডার মাঠে মার্চের প্রথম সপ্তাহে হবে পরবর্তী অধ্যায়ের সূচনা। মেসির পায়ের জাদুতে আরও কী বিস্ময় অপেক্ষা করছে, তা জানার জন্য এখন উদগ্রীব ফুটবল ভক্তরা!
Leave a Reply